শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি আছে কিনা, তা বুঝতে লালারসের পরীক্ষা করা হয়। শুরু থেকেই বিশ্ব জুড়ে এই নিয়ম মেনেই কাজ করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। তার জন্য পরণে পিপিই কিট চড়িয়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের।
কিন্তু এই পরিস্থিতির সমাধানের ইঙ্গিত দিল আইসিএমআর। একটি গবেষণা পত্রে আইসিএমআর জানিয়েছে, লালারসের নমুনা সংগ্রহ না করেও করোনা পরীক্ষা করা সম্ভব। গার্গল করা জলেই নাকি ধাকে ভাইরাসের উপস্থিতি। ফলে সেই জল পরীক্ষা করলেই সমাধান মিলতে পারে।
লালারসের নমুনা এই পদ্ধতিতে নিজেই টেস্টিংয়ের জন্য দেওয়া যেতে পারে। এতে স্বাস্থ্যকর্মীর প্রয়োজন হবে না। এরফলে স্বাস্থ্যকর্মীদের পিপিই কিট পরে আর নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে লালারস সংগ্রহ করতে হবে না। যে নিজেকে করোনা আক্রান্ত বলে সন্দেহ করছে, সে নিজেই গার্গেল করার সময় তার গার্গল করা জল আলাদা করে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে দিয়ে আসতে পারবেন।
এর ফলে পরীক্ষা পদ্ধতি আরও সহজ হবে ও কম খরচে হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
গবেষণায় উল্লেখ করা হয়েছে, বিকল্প পদ্ধতিতে নমুনা সংগ্রহ করা হলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে। এই বিকল্প পদ্ধতি “gargle lavage”-র সঙ্গে ন্যাসোফ্যারাইঙ্গেল ও অরোফ্যারাইঙ্গেলকে তুলনা ও করা হয়।
মে-জুন মাসে AIIMS-এ চিকিৎসাধীন ৫০ জন কোভিড রোগীর ওপর এই ক্রস ফাংশনাল গবেষণা করে আইসিএমআর।
আক্রান্ত হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লালারসের নমুনা ও গার্গেল করা জলের নমুনা নেওয়া হয়। এরপর RTPCR পদ্ধতিতে তার পরীক্ষা করা হয় । দেখা যায়, সব গার্গেল নমুনা পজিটিভ হয়েছে।
আরও দেখা যায় যে, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করার সময় অস্বস্তি বোধ করেন অনেক রোগী। এক্ষেত্রে সেই অস্বস্তি অনেকটাই কম।
রিপোর্টের শেষে বলা হয়েছে যে, সমীক্ষায় উঠে এসেছে যে গার্গেলের মাধ্যমেও নমুনা নেওয়া যেতে পারে। যদিও আরও অনেক মানুষের থেকে নমুনা নিয়ে তা পরীক্ষা করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। তবে এই পরীক্ষার জন্য বাড়ির জল দিয়ে গার্গেল বা বেটাডিন দিয়ে গার্গেল করা জল ব্যবহার করা যাবে না। টেস্টিংয়ের জন্য গার্গেল করার ক্ষেত্রে একদম বিশুদ্ধ পানীয় জল নিতে হবে। কারণ বাড়ির জলে অন্য জীবাণু থাকতে পারে। আর জলে বেটাডিন দিয়ে গার্গল করলে ভাইরাসের উপস্থিতি বোঝা যাবে না।
বিকল্প এই পদ্ধতিতে করোনা পরীক্ষা কবে শুরু হবে তা নিয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে ICMR।