‘নিঃশব্দে’ জিনপিঙের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করছেন ট্রাম্প? পূর্ব এশিয়ার বন্ধু দেশে হতে পারে চিন-আমেরিকা বৈঠক

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে সাক্ষাতের পরিকল্পনা করছেন। তবে চিনে গিয়ে নয়। পূর্ব এশিয়ার অন্য একটি দেশে হতে পারে বিশ্বের মহাশক্তিধর এই দুই রাষ্ট্রের প্রধানদের সাক্ষাৎ। হোয়াইট হাউসের তরফে এই সাক্ষাৎ নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে। এমনকি, জিনপিং এবং ট্রাম্পের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের আয়োজন করা যায় কি না, তা-ও দেখা হচ্ছে। তবে পুরো পরিকল্পনাটাই চলছে ‘নিঃশব্দে’। হোয়াইট হাউস সূত্র উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।

আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে দক্ষিণ কোরিয়ার গেয়োংজু শহরে এশিয়া-প্যাসিফিক ইকোনমিক কোঅপারেশন (এপিইসি)-এর সম্মেলন হওয়ার কথা। বিভিন্ন দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীরা এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। ট্রাম্প তাঁর শীর্ষ পরামর্শদাতাদের নিয়ে এই সম্মেলনে যেতে পারেন। এখান থেকে এক দিকে যেমন আমেরিকায় আরও বিনিয়োগকারীকে আহ্বান জানানো এবং অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার সুযোগ পাবেন ট্রাম্প, অন্য দিকে এই সম্মেলনেই চিনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগও মিলতে পারে। কারণ, জিনপিংও এপিইসি-তে যোগ দিতে দক্ষিণ কোরিয়ায় যাবেন। অক্টোবরের শেষ এবং নভেম্বরের শুরুর দিকে এই সম্মেলন হওয়ার কথা

এপিইসি-তে ট্রাম্প আদৌ যাবেন কি না, সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। পুরো বিষয়টাই এখনও রয়েছে ভাবনাচিন্তার পর্যায়ে। সূত্রের খবর, যদি ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়ায় যান, তবে সেখান থেকে ফেরার পথে আরও কিছু দেশে সফর করতে পারেন। হোয়াইট হাউসের এক আধিকারিক সিএনএন-কে বলেছেন, ‘‘দক্ষিণ কোরিয়ায় একটা সফর নিয়ে আলোচনা চলছে। অর্থনৈতিক সহযোগিতাই এই সফরের প্রধান লক্ষ্য হবে। এখনও কিছু চূড়ান্ত হয়নি।’’

মার্কিন সংবাদমাধ্যমে দাবি, দক্ষিণ কোরিয়ায় গেলে ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার প্রশাসক কিম জং উনের সাক্ষাতের সুযোগও তৈরি হবে। যদিও এপিইসি-তে কিম থাকবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। হোয়াইট হাউস আপাতত সেটা নিয়ে ভাবছে না। জিনপিঙের সঙ্গে বৈঠক আয়োজন করা যায় কি না, সেটাই আপাতত মার্কিন আধিকারিকদের লক্ষ্য। গত মাসে ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলার সময় জিনপিং তাঁকে সস্ত্রীক চিনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন। ট্রাম্পও সে আমন্ত্রণে সাড়া দেন। কিন্তু এ নিয়ে কোনও তারিখ চূড়ান্ত হয়নি।

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট লি জে মিউং গত সপ্তাহে এপিইসি-র জন্য ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানান। ট্রাম্প দক্ষিণ কোরিয়া গেলে কিমের সঙ্গে তাঁর দেখা হতে পারে বলেও দাবি করেন। তার উত্তরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, ‘‘আমি সেটা করব। আমরা কথা বলব। উনিও আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। আমাদের দেখা হবে এবং আমাদের মধ্যে সম্পর্ক আরও ভাল হবে।’’

উল্লেখ্য, সম্প্রতি চিনে এসসিও সম্মেলেন যোগ দিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিন রাষ্ট্রনেতার এই সাক্ষাৎকে ট্রাম্প ভাল চোখে দেখেননি। প্রথম থেকেই কটাক্ষ করে এসেছেন। দু’দিন আগে তিনি এই তিন জনের একটি ছবি দিয়ে লেখেন, ‘‘ভারত আর রাশিয়াকে আমরা মনে হয় অন্ধকারতম চিনে হারিয়ে ফেললাম। ওদের ভবিষ্যৎ একসঙ্গে আরও সমৃদ্ধ হোক।’’ ভারতের সঙ্গে শুল্কযুদ্ধের আবহে ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হয়েছিল। তবে পরে তিনি আবার জানান, মোদীর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভাল। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে ভয়ের কোনও কারণ নেই। মোদীও সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে ট্রাম্পের কথার ইতিবাচক জবাব দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.