শ্রীলঙ্কায় শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য যা করা দরকার তাই করা হোক। সেনাবাহিনীকে এমনই নির্দেশ দিলেন শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী তথা কার্যনির্বাহী প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিঙ্ঘে। বুধবার বিক্রমসিঙ্ঘের অফিসে বিক্ষোভকারীদের হামলার পর সেনাবাহিনীকে এই নির্দেশ দেন তিনি।
কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা। তবে অর্থনৈতিক বেহাল দশার জন্য রাজাপক্ষে প্রশাসনকেই দায়ী করছেন সে দেশের সাধারণ নাগরিক। আর তার জেরেই বিক্ষোভ। বুধবার, এক সপ্তাহের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার বিক্ষোভকারীরা সুরক্ষিত সরকারি ভবনে প্রবেশ করে বিক্ষোভ দেখান।
অর্থনৈতিক সঙ্কট এবং দেশবাসীর বিক্ষোভের মুখে পড়ে বর্তমানে পলাতক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে গত মে মাসে দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এনেছিলেন বিক্রমসিঙ্ঘকে। এর পর মঙ্গলবার রাতে গোতাবায়া দেশ ছাড়ার পর বুধবার অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন বিক্রমসিঙ্ঘে। তবে এই সিদ্ধান্তের পর বুধবার দিনভর দেশ জুড়ে দিকে দিকে বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে। বিক্রমসিঙ্ঘের অফিসে হামলাও চালান বিক্ষোভকারীরা। পার্লামেন্টের উদ্দেশেও মিছিল করে যান বিক্ষোভকারীরা। কিন্তু পার্লামেন্টের ২০০ মিটার আগেই তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। বিভিন্ন জায়গায় দফায় দফায় সেনা এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিক্ষোভকারীদের। কাঁদানে গ্যাস এবং লাঠিচার্জ করেও দমানো যায়নি বিক্ষোভকারীদের। তাঁদের দাবি, শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে সরতে হবে বিক্রমসিঙ্ঘেকে।
গোতাবায়া দেশ ছেড়ে পালানোর পরই বিক্রমসিঙ্ঘে যে প্রেসিডেন্ট পদের দায়িত্ব সামলাবেন, তা আঁচ করতে পেরে আগেই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। জানিয়েছিলেন, বিক্রমসিঙ্ঘে যেন কোনও ভাবেই প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব না নেন। শুধু তাই-ই নয়, স্থানীয় সময় দুপুর ১টার মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হবে তাঁকে। না হলে আরও অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে দেশের পরিস্থিতি। তবে সেই হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেন বিক্রমসিঙ্ঘে। আর তার পরই গোটা দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন তিনি।
এর পর বিক্রমসিঙ্ঘে সেনাবাহিনীকে নয়া নির্দেশ দেওয়ার পর দেশ জুড়ে আবারও অশান্তির আগুন ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।