মৃত্যু হয়েছে লাদেনের ছেলে হামজা বিন লাদেনের। সন্ত্রাসবাদের যুবরাজ আখ্যা দেওয়া হচ্ছিল তাকে। তার মাথার দাম ১০ লক্ষ ডলার ধার্য করেছিল আমেরিকা। বুধবার তার মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে।
মার্কিন আধিকারিকদের সূত্রে এই খবর পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমে এনবিসি নিউজ। যদিও তার মৃত্যু সম্পর্কে কোনও বিস্তারিত তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি। তার মৃত্যুতে আমেরিকার কোনও ভূমিকা আছে কিনা, সেটাও স্পষ্ট নয়।
বুধবার এই খবর নিয়ে কানাঘুষো শোনা যাওয়ায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। বলেন, ‘হামজা বিন লাদেন কি মৃত?’ ট্রাম্প বলে তিনি এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চান না।
২০১৮-তে শেষবার হামজা বিন লাদেনের বার্তা প্রকাশ করেছিল আল-কায়েদা। সেখানে হামজাকে সৌদি আরবকে হুমকি দিতে শোনা গিয়েছিল।
১৯৮৯ সালে জন্ম হামজা বিন লাদেনের। ১৯৯৬ তে যখন ওসামা বিন লাদেন আফগানিস্তানে চলে যায় ও আমেরিকার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করে, তকন সঙ্গে ছিল হামজাও। একাধিক ভিডিওতে লাদেনের সঙ্গে হামজাকে দেখা গিয়েছিল।
লাদেনের এই ছেলেকে বহুদিন ধরেই খুঁজছে আমেরিকা৷ কখনও জানা যায় যে সে পাকিস্তানে রয়েছে, কখনওবা আফগানিস্তানে৷ কখনও আবার ইরাকে৷ তবে আমেরিকা হাল ছাড়েনি৷ গত বছর শোনা যায়, এই হামজা ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে জঙ্গি হামলায় অভিযুক্ত মহম্মদ অট্টার মেয়েকে বিয়ে করে৷ আল কায়দা সংগঠনে হামজা কোনও বড়সড় পদেই ছিল বলে অনুমান করা হয়।
চলতি বছরের মার্চ মাসে ১ মিলিয়ন ডলার আর্থিক পুরস্কার দেওয়ার কথা ঘোষণা করে আমেরিকা।
মাত্র ২২ বছর বয়সেই সে তার বাবাকে চিঠি লিখে জানিয়েছিল যে সে জিহাদের পথই বেছে নিচ্ছে। এক প্রাক্তন এফবিআই কর্তা, যিনি ৯/১১ হামলার তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন, তিনিই ওই চিঠি প্রকাশ্যে এনেছিলেন বছর দুয়েক আগে। আলি সউফান নামে ওই গোয়েন্দা ইনভেস্টিগেশন ব্যুরোর চিফ ছিলেন। তাঁর মতে, হামজা যখন ছোট ছিল তখন থেকেই স্থির হয়ে গিয়েছিল যে লাদেনের পরে আল-কায়েদা চালাবে সেইই।
সউফান জানান, দীর্ঘদিন বাবার দেখা পায়নি হামজা। সেইসময়ই এই চিঠি লেখে সে। হামজা বাবাকে লিখেছিল, ‘প্রত্যেকটা হাসি, যা তুমি আমাকে উপহার দিয়েছ, প্রত্যেকটা কথা যা তুমি আমাকে বলেছ সব মনে আছে। আল্লার নামে আমি জিহাদের পথ বেছে নিচ্ছি।’
লন্ডন, ওয়াশিংটন, প্যারিসে বারবার হামলার হুমকি দিতে দেখা গিয়েছে তাকে। আমেরিকা তাকে ‘specially designated global terrorist’ তকমা দিয়েছিল। ওসামাকেও এই তকমা দেওয়া হয়েছিল। বাবার ভাষাতেই কথা বলতে দেখা গিয়েছিল হামজাকে। মূলত প্রতিশোধ নেওয়ার কথাই উঠে আসত হামজার ভাষণে। তার মূল বক্তব্য ছিল, ”আমেরিকাবাসী আমি আসছি। তোমাদের বুঝিয়ে দেব। বাবার সঙ্গে যা করেছ, তার বদলা নেবই।”