এবার চিনের
বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে ফোনে আলোচনা সারলেন ভারতের
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। ভারতীয় বিদেশমন্ত্রককের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, বৃহস্পতিবার
দুপুরে চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনে প্রায় ৭৫ মিনিট কথা বলেন জয়শংকর। এই বৈঠকে চিন স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন
করার ওপর জোর দিলেও সীমান্তে শান্তি বজায় রাখাই যে তার পূর্বশর্ত, সেটি ফের স্পষ্ট
করে দিয়েছে ভারত।
দশ দফা আলোচনার পর অবশেষে পূর্ব লাদাখের প্যাংগং
সো থেকে সেনা সরিয়েছে ভারত ও চিন। গোগরা, হট স্প্রিংস ও সবচেয়ে বড় কাঁটা দেপসাংয়ে
এখনও সমস্যা আছে। এর মধ্যেই পুরো প্রক্রিয়ার রিভিউ করলেন ভারত ও চিনের বিদেশমন্ত্রী।
ভারতীয় বিদেশমন্ত্রককের পক্ষ থেকে জানান হয়েছে, বৃহস্পতিবার দুপুরে চিনা বিদেশমন্ত্রীর
সঙ্গে ফোনে প্রায় ৭৫ মিনিট কথা বলেন জয়শংকর। শেষে ঠিক হয় যে এবার বিদেশমন্ত্রীদের মধ্যে হটলাইন
তৈরি হবে। চিন স্বাভাবিক সম্পর্ক স্থাপন করার ওপর জোর দিলেও সীমান্তে শান্তি বজায় রাখাই
যে তার পূর্বশর্ত, সেটি ফের স্পষ্ট করে দিয়েছে ভারত।
জয়শংকর জানিয়ে দেন যে, সীমান্ত সমস্যা মিটতে
হয়তো দেরি হবে কিন্তু হিংসার মাধ্যমে সীমান্তে শান্তি নষ্ট করা হলে সম্পর্ক খারাপ হতে
বাধ্য। দুই মন্ত্রী নিবিড় যোগাযোগ রাখার কথা জানান ও হটলাইন তৈরির সিদ্ধান্ত নেন।
অন্যদিকে, চিনের তরফ থেকে বলা হয়েছে যে ওয়াং
বার্তা দিয়েছেন যে পারস্পরিক বিশ্বাস ও সহযোগিতার পথে যেন অটুট থাকে ভারত ও চিন এবং
সন্দেহের বশে যেন পিছিয়ে না যায়। ওয়াং ই বলেন যে সীমান্তের বিষয়টি ঠিক করে দুই দেশের
মেটানো উচিত যাতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক তার জন্য মার না খায়।
জয়শংকর
তাঁকে মনে করিয়ে দেন মস্কোতে তাদের আলোচনার কথা। তারপর ধাপে ধাপে কীভাবে কাজ হয়েছে
ও সেই ভাবে বাকি স্থানেও সেনা কমানোর ওপর জোর দেন বিদেশমন্ত্রী। একবার সমস্ত বিতর্কিত
জায়গায় সেনা সরে গেলে তারপর পুরো অঞ্চল থেকে সেনা কমানোর ওপর কাজ করা যেতে পারে বলে
ওয়াং ই-কে জানান জয়শংকর।
ওয়াং বলেন যে সীমান্তের বিবাদটি বাস্তবে কিন্তু
ভারত-চিন সম্পর্কের পুরো কাহিনি সেটা নয়। তাই ঠিক ভাবে সেটা বোঝা উচিত। একই ভাবে গত
বছরের ভারত-চিন পরিস্থিতির জন্য কে দায়ী, কে নয়, সেটাও খুব স্পষ্ট বলে তিনি জানান।
সব মিলিয়ে
দুই দেশ যে খুব ভিন্ন ভাবে সীমান্তের সমস্যাটিকে দেখছে সেটা স্পষ্ট। ভারতের কাছে সব
কিছু নির্ভর করছে সীমান্তের পরিস্থিতির ওপর। চিন বলছে ওটা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু ওটাই
সব নয়। তবে এর মধ্যেও প্যাংগংয়ে শান্তি ফিরেছে। আগামী দিনে কত দ্রুত পূর্ব লাদাখের
অন্য স্থানে সেনা প্রত্যাহার হয়ে, কতটা কার্যকরী হয়ে বিদেশমন্ত্রীদের মধ্যে হটলাইল,
সেটাই দেখার।