লাদাখ উপত্যকার চিনা পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)-র মোকাবিলার ভারতীয় সেনার হাতে দেশীয় প্রযুক্তিতে হালকা ট্যাঙ্ক জ়োরাবর তুলে দেওয়ার প্রক্রিয়া এগোচ্ছে দ্রুতগতিতে। ইতিমধ্যেই হয়েছে কয়েক দফা সফল পরীক্ষা। জ়োরাবরকে যুদ্ধোপযোগী করে তোলার প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কামান বসানোর বরাত দেওয়া হয়েছে বেলজ়িয়ামের সংস্থা জন ককেরিল ডিফেন্সকে।
যে কোনও ট্যাঙ্কের মূল অস্ত্র হল তার উপরে ৩৬০ ডিগ্রি কোণে ঘুরতে সক্ষম টারেটে বসানো কামান। সেই টারেট এবং কামান নির্মাণে বিশ্বের অন্যতম সেরা সংস্থা ককেরিল। জ়োরাবরের উপরে টারেট-সহ ১০৫ এমএম রাইফেলিং গান বসানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাদের। ভারতেই তা যৌথ উদ্যোগে নির্মিত হবে। প্রসঙ্গত, ২০২০-র অগস্টে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চিনা ফৈজের হামলায় ২০ জন ভারতীয় সেনার মৃত্যুর পরেই ওই অঞ্চলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজার সক্রিয়তা শুরু হয়েছিল। সম্ভাব্য চিনা হামলার আশঙ্কায় দ্রুত ‘প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায়’ (এলএসি) সেনা মোতায়েন করার সময় খামতি ধরা পড়ে হালকা ট্যাঙ্কের ক্ষেত্রে।
ডিআরডিও-র তৈরি ‘অর্জুন’, রুশ টি-৯০ (ভীষ্ম), টি-৭২ (অজেয়) ওজনে ভারী হওয়ায় লাদাখের পাহাড়ি অঞ্চলে যুদ্ধের উপযুক্ত নয়। সে সময় চিনা হালকা ট্যাঙ্ক জ়েডটিকিউ-১৫-র মোকাবিলায় ভারতীয় সেনাকে ভরসা করতে হয়েছিল আশির দশকে রাশিয়া থেকে আনা বিএমপি-২ ‘ইনফ্যান্ট্রি ফাইটিং ভেহিকল্’ (সাঁজোয়া গাড়ি)-এর উপর। লাদাখে টানাপড়েনের সময়ই সেনার তরফে হালকা ট্যাঙ্কের আবেদন জানানো হয়েছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের কাছে।
প্রাথমিক ভাবে চাহিদা মেটাতে বিদেশ থেকে আমদানির কথা ভাবা হলেও শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী মোদীর ‘আত্মনির্ভর ভারত’ স্লোগান অনুসরণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ডিআরডিও-কে হালকা ট্যাঙ্ক নির্মাণের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তাদের সহযোগী হয় এল অ্যান্ড টি। জ়োরাবরের কয়েক দফা পরীক্ষা ইতিমধ্যেই হয়েছে পাহাড়ঘেরা লাদাখের শীতল মরুভূমিতে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রের খবর, পরীক্ষার ফল সন্তোষজনক। লাদাখের পাশাপাশি গুজরাতের হজ়িরায় ‘এল অ্যান্ড টি হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং’-এর সহযোগিতায় হয়েছে ‘ট্র্যাক ট্রায়াল’ (ট্যাঙ্ক বহনকারী ইস্পাতের চেনের সক্ষমতার পরীক্ষা)।