ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বাগ্যুদ্ধের পরদিনই ভলোদিমির জ়েলেনস্কি জানালেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সমর্থন গুরুত্বপূর্ণ। আপাত ভাবে অনেকেই বিষয়টি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সুর নরমের চেষ্টা বলে মনে করছেন। তবে যুদ্ধবিরতি নিয়ে নিজের অবস্থানে অনড় থাকারই ইঙ্গিত দিয়েছেন জ়েলেনস্কি। জানিয়েছেন নিরাপত্তার নিশ্চয়তা ছাড়া যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়া ইউক্রেনের জন্য বিপজ্জনক।
শনিবার সমাজমাধ্যমে একাধিক পোস্ট করেন জ়েলেনস্কি। একটি পোস্টে তিনি লেখেন, “আমরা সব ধরনের সাহায্যের জন্য আমেরিকার কাছে ভীষণ ভাবে কৃতজ্ঞ। আমি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে কৃতজ্ঞ। মার্কিন কংগ্রেস এবং আমেরিকার বাসিন্দাদের কাছেও কৃতজ্ঞ। ইউক্রেনের মানুষ তাদের এই অবদান সর্বদা মনে রাখবে।”
আমেরিকার সঙ্গে না-হওয়া খনিজ চুক্তি নিয়েও মুখ খুলেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তিনি লেখেন, “আমরা খনিজ চুক্তি করতে প্রস্তুত। এবং সেটাই হবে আমাদের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা করার প্রথম ধাপ। কিন্তু সেটাই শুধু যথেষ্ট নয়। আমরা আরও একটু বেশি কিছু চাই।”
আমেরিকা এবং ইউক্রেনের মধ্যে বিশেষ খনিজ চুক্তি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই কথাবার্তা চলছিল। জ়েলেনস্কিই এই চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তাতে বিশেষ আগ্রহী ছিলেন ট্রাম্প। ইউক্রেনে কিছু বিরল খনিজ পদার্থ পাওয়া যায়। সেই খনির দিকে আমেরিকার নজর রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, বিনা বাধায় সেই খনি ব্যবহারের অনুমতি পাওয়ার কথা ছিল আমেরিকার। আমেরিকাকে বিরল খনিজ ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে তার বদলে ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চেয়েছিলেন জ়েলেনস্কি।
কিন্তু চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। বরং রাশিয়া-ইউক্রেনের যুদ্ধের বিষয়ে আলোচনা ক্রমে ট্রাম্প এবং জ়েলেনস্কির মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ে পরিণত হয়। ট্রাম্প প্রকাশ্যেই অভিযোগ করেন, জ়েলেনস্কি লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ নিয়ে জুয়া খেলছেন। তিনি সমঝোতার পথে হাঁটতে চাইছেন না। রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধের জন্যও জ়েলেনস্কিকেই দায়ী করেন ট্রাম্প। ইউক্রেনের প্রতিনিধিদেরও বেরিয়ে যেতে বলা হয়। বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে আসেন জ়েলেনস্কিও। আমেরিকা ছেড়ে শুক্রবারই ইউক্রেনের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি।