মোদীর সফরের আগেই ইস্পাত, অ্যালুমিনিয়ামে কেন শুল্ক বসাচ্ছেন ট্রাম্প, কী প্রভাব পড়বে ভারতে

অ্যালুমিনিয়াম এবং ইস্পাতজাত পণ্যের উপর রবিবার নতুন করে শুল্ক বসানোর কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। ওই পণ্যগুলির উপর চলতি সপ্তাহ থেকেই বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আদায় করা হবে বলেও বার্তা দিয়েছে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমেরিকা সফরের ঠিক আগেই এই ঘোষণা ঘিরে তৈরি হয়েছে জল্পনা।

আগামী ১২ এবং ১৩ ফেব্রুয়ারি, দু’দিনের সফরে আমরিকা যাচ্ছেন মোদী। তার মুখে ট্রাম্পের এই ঘোষণা যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন কূটনীতিকদের অনেকেই। কারণ, আমেরিকার এই সিদ্ধান্তের ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে চাপে পড়বে ভারত। প্রসঙ্গত, চিন থেকে আমদানি করা পণ্যে আমেরিকা ১০ শতাংশ বাড়তি শুল্ক কার্যকর করেছেন ইতিমধ্যেই। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পড়শি দেশ কানাডা এবং মেক্সিকোর পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক বসানোর ঘোষণা করার পরেও ওই দুই দেশের রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে আলোচনার প্রেক্ষিতে এক মাসের জন্য শুল্ক কার্যকরের সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখেছেন।

অতিমারি পরস্থিতির পরেই বিশ্ব জুড়ে ইস্পাত শিল্পে মন্দা চলছে। আমেরিকার ইস্পাত উৎপাদনকারী সংস্থাগুলি একাধিক বার অভিযোগ তুলেছে, কয়েকটি দেশ সস্তায় ‘হট রোলড’ জাতীয় ইস্পাত পণ্য রফতানি করায় সে দেশের ইস্পাত শিল্পে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। একই অভিযোগ উঠেছে অ্যালুমিনিয়ামজাত পণ্য রফতানির ক্ষেত্রেও। বাণিজ্যিক পরিসংখ্যান বলছে, আমেরিকায় ইস্পাত পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ভারত প্রথম সারির দেশ নয়। সংবাদ সংস্থা রয়টার্সের দেওয়া তথ্য বলছে ইস্পাত আমদানির বৃহত্তম উত্সগুলি হল কানাডা, ব্রাজিল এবং মেক্সিকো। তার পরে দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভিয়েতনাম। এর পরে রয়েছে ভারত।

বছরে প্রায় ৩০০ কোটি ডলারের (প্রায় ২৬ হাজার ২৫০ কোটি টাকা) ইস্পাত পণ্য ভারত থেকে আমদানি করে ট্রাম্পের দেশ। অ্যালুমিনিয়াম রফতানির পরিমাণ আরও কিছুটা কম। এ ছাড়া অন্য কিছু ধাতব পণ্যও আমেরিকায় রফতানি করে ভারত। আর সেখানেই রয়েছে আশঙ্কার ইঙ্গিত। পরবর্তী ধাপে ট্রাম্প অন্যান্য ধাতব পদার্থের উপরেও শুল্ক বসাতে পারেন বলে মনে করছেন অনেকেই। ঘটনাচক্রে, চিন সরকারের ইস্পাত উৎপাদনের খরচের চেয়েও কম দামে রফতানি (ডাম্পিং) নীতির ফলে ভারতও সমস্যায় রয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলেন, চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসে ভারতে ইস্পাত আমদানি বেড়ে ৫৫ লক্ষ টন ছাড়িয়েছে। গত অর্থবর্ষে (২০২৩-২৪) প্রথম ছ’মাসে যা ছিল সাড়ে ৩৬ লক্ষ টন। এই মধ্যে আমদানিকৃত চিনা ইস্পাতের পরিমাণ ১০ লক্ষ টন থেকে বেড়ে সাড়ে ১৮ লক্ষ টন হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.