হরিয়ানার সমাজমাধ্যম প্রভাবী জ্যোতি মলহোত্রার মোবাইলে ‘জাট রনধাওয়া’ নামে কার নম্বর সেভ করা ছিল? কে ওই সন্দেহভাজন ব্যক্তি? শনিবার হরিয়ানার পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করার পর এমন বেশ কিছু প্রশ্ন উঠে আসতে শুরু করেছে। পুলিশের এফআইআর অনুসারে, ওই গোটা পর্বে এহসান-উর-রহিম ওরফে দানিশের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বস্তুত, এই দানিশ ছিলেন নয়াদিল্লিতে পাকিস্তানি হাই কমিশনের এক আধিকারিক। সম্প্রতি তাঁকে এ দেশে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করেছে ভারত সরকার। তাঁকে ভারত ছাড়ার নির্দেশও দেওয়া হয়।
পুলিশি জেরায় জ্যোতি স্বীকার করেছেন, দানিশের সঙ্গে তাঁর আলাপ ছিল। দানিশের মাধ্যমেই বাকি সন্দেহভাজন পাক গুপ্তচরদের সঙ্গে আলাপ হয় জ্যোতির। সংবাদমাধ্যম ‘হিন্দুস্তান টাইম্স’ অনুসারে, পুলিশ এফআইআরে উল্লেখ করেছে, ২০২৩ সালে পাকিস্তানে ঘুরতে গিয়ে আলি এহওয়ানের সঙ্গে আলাপ হয় হরিয়ানার ধৃত সমাজমাধ্যম প্রভাবীর। পাকিস্তানে জ্যোতির থাকা এবং তাঁকে ঘোরানোর দায়িত্ব ছিল আলির উপর। আলির মাধ্যমেই পাকিস্তানি গুপ্তচর সংস্থার আধিকারিকদের সঙ্গে আলাপ হয় ভারতীয় সমাজমাধ্যম প্রভাবীর। এফআইআরে বলা হয়েছে, ওই সময় শাকির এবং রানা শাহবাজ় নামে দু’জনের সঙ্গেও আলাপ হয়েছিল তাঁর। এই দু’জনও পাক গুপ্তচর বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের।
পুলিশি এফআইআরে উল্লেখ রয়েছে, ২০২৩ সালে পাকিস্তানে গিয়ে আলাপ হওয়া ওই শাকিরই আসলে ‘জাট রনধাওয়া’। যাতে কারও মনে কোনও রকম সন্দেহ না জাগে, সেই জন্যই শাকিরের নম্বর ওই ভুয়ো নামে নিজের মোবাইলে সেভ করেছিলেন জ্যোতি। পাকিস্তান থেকে ফেরার পরেও সন্দেহভাজন পাক গুপ্তচরদের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ ছিল বলে এফআইআরে বলা হয়েছে। পাক চরেদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে জ্যোতি হোয়াট্সঅ্যাপ, টেলিগ্রাম এবং স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করতেন বলে সন্দেহ পুলিশের।
হরিয়ানার হিসারের সিভিল লাইন্স পুলিশ শনিবার তাঁকে গ্রেফতার করে। সরকারি গোপনীয়তা আইন এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতার যথাযথ ধারায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যম ‘টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’র এক প্রতিবেদন অনুসারে, তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, সমাজমাধ্যমে পাকিস্তানকে ইতিবাচক ভাবে উপস্থাপন করার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছিল জ্যোতিকে। ঘটনাচক্রে, গত কয়েক মাসে পাকিস্তান ভ্রমণ নিয়ে জ্যোতির ইউটিউব চ্যানেলে বেশ কিছু ভিডিয়ো প্রকাশিত হয়েছে। তাঁর গ্রেফতারির প্রসঙ্গে হরিয়ানার হিসার পুলিশের এক আধিকারিক বিকাশ কুমার জানিয়েছেন, জ্যোতিকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে এবং তাঁকে জেরা করে আরও তথ্য সংগ্রহের চেষ্টা চলছে।