বরফে পায়ের ছাপ কার? হিমাচলে শৃঙ্গ আরোহনে গিয়ে অদ্ভুত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন পর্বতারোহীরা

হিমালয়ে ইয়েতি! গল্পের বইয়ে ‘ইয়েতি’র কথা অনেকেই পড়েছেন। দানবাকৃতি, অনেকটা গরিলার মতো দেখতে— এমনই নানা রকম ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে ইয়েতিকে। ‘তুষারমানব’ হিসেবেও পরিচিতি রয়েছে তার। এই তুষারমানব-কে নিয়ে নানান রকম গল্পকথা প্রচলিত থাকলেও, এর অস্তিত্ব কিন্তু আজ পর্যন্ত প্রমাণিত হয়নি। তাই গল্পকথাতেই থেকে গিয়েছে ‘ইয়েতি’। কয়েক জন বাঙালি অভিযাত্রীর সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা আরও এক বার উস্কে দিল ইয়েতির অস্তিত্বকে।

‘হাওড়া ডিস্ট্রিক্ট মাউন্টেনার্স এন্ড ট্রেকার্স অ্যাসোসিয়েশন’ ও ‘হিমালয়ান অ্যাসোসিয়েশন’-এর যৌথ উদ্যোগে হিমাচলপ্রদেশের ইন্দ্রাসন শৃঙ্গ (৬২২১ মিটার) ও পড়শি দেওটিব্বা (৬০০১ মিটার) শৃঙ্গে অভিযান চালাতে গিয়েছিল দু’টি অভিযাত্রী দল। যাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এভারেস্টজয়ী পর্বতারোহী মলয় মুখোপাধ্যায় এবং দেবাশিস বিশ্বাসের মতো পর্বতারোহীরা। হিমাচলের পীর পঞ্জাল হিমালয়ের সবচেয়ে কঠিন শৃঙ্গ ইন্দ্রাসন বরাবরই পর্বতারোহীদের পছন্দের। সেখানে বিপজ্জনক পথ, ভাঙাচোরা আইসফলের বাধা টপকে পৌঁছতে হয় শীর্ষে। সেই লক্ষ্যে গত মাসেই হাওড়ার পর্বতারোহণ ক্লাবের ১২ জনের দলকে নিয়ে হিমাচলে রওনা দেন মলয়। গত ১৫ জুন সকালে মলয়-সহ ওই দলের ৯ জন সদস্য দেওটিব্বার শীর্ষে পৌঁছেছেন।

তার পরেই ১১ জন সঙ্গীকে নিয়ে রওনা দেন দেবাশিস। সেখানেই এক অদ্ভূত অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হন দেবাশিসরা। তিনি বলেন, “দেওটিব্বা অভিযানের সময় ক্যাম্প ওয়ান থেকে ক্যাম্প টু-তে যাওয়ার সময় আমরা বরফের উপর অদ্ভুত পায়ের ছাপ দেখতে পাই। অভিযাত্রীরা কেউই বুঝে উঠতে পারছিলেন না এত বড় পায়ের ছাপ কিসের। প্রায় সাড়ে সাত ইঞ্চি লম্বা ও সাড়ে ছয় ইঞ্চি চওড়া এই পায়ের ছাপ বরফের উপর দিয়ে এগিয়ে গিয়েছে।” দেবাশিস আরও বলেন, “আমিই ওই পায়ের ছাপগুলিকে ক্যামেরাবন্দি করি। শেরপারা পায়ের ছাপ নিয়ে প্রশ্ন করলে তাঁদের জানাই এটি ভালুকের পায়ের ছাপ। শেরপাদের হাবেভাবে বোঝা গেল, তাঁরা মুখে কিছু না বললেও তাঁদের দৃঢ় বিশ্বাস এটি ইয়েতির পায়ের ছাপ।” দেওটিব্বা এবং ইন্দ্রাসন আরোহন সেরে ফেরার সময় তুষারপাতের কারণে সেই পায়ের ছাপ আর দেখা যায়নি।

দেবাশিস আরও জানান, নীচে নেমে ওই পায়ের ছাপ আরও কয়েক জনকে দেখানো হয়। তাঁদের বক্তব্য, “ভালুক তো ফলমূল খায়। কিন্তু এত উচ্চতায় তো গাছপালাই নেই। সেখানে ভালুক থাকবে কী ভাবে। এই পায়ের ছাপের সঙ্গে ভালুকের পায়ের ছাপের বিশেষ মিলও নেই।” কেউই বুঝে উঠতে পারেননি যে এত বড় পায়ের ছাপ ঠিক কিসের হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.