ধনখড়ের উত্তরসূরি কে? উপরাষ্ট্রপতি পদের প্রার্থী চূড়ান্ত করে ফেলল বিজেপি, সায় মিলল শরিকদেরও

জগদীপ ধনখড়ের উত্তরসূরি কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনার মাঝেই এ বার শাসক জোট এনডিএ-র উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীকে বেছে নিল বিজেপি। রবিবার সন্ধ্যায় দিল্লি থেকে সাংবাদিক বৈঠক করে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা। ধনখড়ের উত্তরসূরি হিসাবে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণকেই দেখতে চাইছে বিজেপি। বিজেপির প্রস্তাবিত নামে সায় দিয়েছে এনডিএ শিবিরের শরিক দলগুলিও।

রবিবার দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক ছিল। ওই সময়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও দলের সদর দফতরে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে নড্ডা বলেন, “সকলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সকলের পরামর্শ চাওয়া হয়েছে। সব শেষে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এনডিএ শিবিরের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণকে বেছে নিচ্ছি।” বিজেপি সভাপতি জানান, তাঁরা চাইছেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উপরাষ্ট্রপতি বাছা হোক। এনডিএ শিবিরের সকলেই রাধাকৃষ্ণণের নামে সমর্থন জানিয়েছেন। এ অবস্থায় উপরাষ্ট্রপতি বাছাইয়ে বিরোধীদের থেকেও সমর্থন চেয়েছেন নড্ডা।

মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল রাধাকৃষ্ণণ তামিলনাড়ুর বাসিন্দা। অতীতে কোয়মবত্তুর থেকে দু’বার সাংসদও হয়েছিলেন তিনি। তামিলনাড়ুতে রাজ্য বিজেপির সভাপতিও ছিলেন। সেই রাধাকৃষ্ণণকে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করে বিজেপি দক্ষিণকে বার্তা দিতে চাইল বলেও মনে করা হচ্ছে। বস্তুত, বিজেপির অন্যতম অগ্রাধিকার বাংলা, পঞ্জাব এবং তামিলনাড়ুরক মন জয় করা। তার মধ্যে বাংলার মন অনেকটা পেয়েছে বিজেপি। শাসন ক্ষমতা না-পেলেও প্রধান বিরোধী দল হিসাবে উঠে এসেছে বাংলায়। তবে বাকি দুই রাজ্যে তা-ও হয়নি। এ অবস্থায় ধনখড়ের উত্তরসূরি হিসাবে রাধাকৃষ্ণণের নাম ঘোষণা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল সিপি রাধাকৃষ্ণণ।

এর আগে তামিলনাড়ু থেকে সঙ্গোল নিয়ে গিয়ে সংসদে বসিয়েছেন মোদী। তাতেও গত লোকসভা নির্বাচনে তেমন ভাল ফল হয়নি। আগামী বছর তামিলনাড়ুতে বিধানসভা ভোট রয়েছে। এ অবস্থায় এনডিএ শিবিরের উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে এমন এক জনকে বেছে নেওয়া হল, যিনি দক্ষিণের ওই রাজ্যে বিজেপির প্রবীণ নেতাদের মধ্যে একজন। রাধাকৃষ্ণণকে উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী করে ২০২৬ সালের নির্বাচনের আগে তামিল মন জয়ের দিকে আরও জোর দেওয়া হল বলেই মনে করছেন অনেকে।

তামিলনাড়ুর ডিএমকে সরকার ‘হিন্দি আগ্রাসন’ প্রসঙ্গে ধারাবাহিক ভাবে আক্রমণ শানিয়ে গিয়েছে কেন্দ্রকে। দক্ষিণের রাজ্যগুলির উপর জোর করে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। কেন্দ্রের তরফে সেই অভিযোগ বার বার খারিজ করা হলেও স্ট্যালিনকে দমানো যায়নি। অনুমান করা হচ্ছে, উপরাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসাবে রাধাকৃষ্ণণকে বেছে নেওয়ায় ভাষা-বিতর্কেও বিজেপি কিছু সুবিধা পাবে।

এ ছাড়া রাধাকৃষ্ণণ অন্য অনগ্রসর শ্রেণি (ওবিসি)-র প্রতিনিধি। প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজেও ওবিসি তালিকাভুক্ত। ঘটনাচক্রে, রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ। রাধাকৃষ্ণণ উপরাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত হলে এই নিয়ে তৃতীয় বার তামিলনাড়ু থেকে কেউ উপরাষ্ট্রপতি হবেন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.