গঙ্গার নীচ দিয়ে কবে থেকে মেট্রোসফর করতে পারবেন সাধারণ যাত্রীরা? ঘোষণা করে দিলেন কর্তৃপক্ষ

আগামী শুক্রবার (১৫ মার্চ) থেকে চালু হয়ে যাচ্ছে গঙ্গার নীচ দিয়ে ছুটে চলা ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। ওই দিন থেকেই যাত্রীরা এই মেট্রোয় সওয়ার হতে পারবেন। আগামী শুক্রবার থেকে নিউ গড়িয়া থেকে রুবি পর্যন্ত এবং জোকা-তারাতলা মেট্রোপথের মাঝেরহাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশেও মেট্রো চলাচল শুরু হবে। কলকাতা মেট্রোর তরফে জানানো হয়েছে, হাওড়া এবং এসপ্ল্যানেড স্টেশন থেকে দিনের প্রথম মেট্রো ছাড়বে সকাল ৭টায়। শেষ মেট্রো ছাড়বে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে। তবে রবিবার মেট্রো পরিষেবা বন্ধ থাকবে। সারা দিনে মোট ১৩০টি মেট্রো যাত্রীদের পরিষেবা দেবে। ব্যস্ত সময়ে ১২ মিনিট অন্তর এবং অন্য সময়ে ১৫ মিনিটের ব্যবধানে মেট্রো পরিষেবা পাওয়া যাবে।

রুবি (হেমন্ত মুখোপাধ্যায়)-নিউ গড়িয়া (কবি সুভাষ) মেট্রোপথে ২০ মিনিট অন্তর পরিষেবা পাওয়া যাবে। সকাল ৯টায় দিনের প্রথম মেট্রো ছাড়বে রুবি এবং নিউ গড়িয়া স্টেশন থেকে। শেষ মেট্রো ছাড়বে বিকেল ৪টে ৪০ মিনিটে। তবে এই মেট্রোপথে শনিবার এবং রবিবার কোনও পরিষেবা পাওয়া যাবে না।

জোকা-তারাতলা মেট্রোপথের মাঝেরহাট পর্যন্ত সম্প্রসারিত অংশে ২৫ মিনিট অন্তর মেট্রো পাওয়া যাবে। দিনের প্রথম মেট্রো ছাড়বে সকাল সাড়ে ৮টায়, শেষ মেট্রো দুপুর বিকেল ৩টে ৩৫ মিনিটে। এখানেও শনিবার এবং রবিবার মেট্রো পরিষেবা মিলবে না।

জিএমের ঘোষণার পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মেট্রো রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক (সিপিআরও) কৌশিক মিত্র বলেন, “হাওড়া ময়দান এবং এসপ্ল্যানেড স্টেশন থেকে প্রথম মেট্রো ছাড়বে সকাল ৭টায়। আর শেষ মেট্রো ছাড়বে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে। সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১২ মিনিট অন্তর মেট্রো পাওয়া যাবে।” তিনি জানান, একটি টিকিটেই হাওড়া ময়দান কিংবা হাওড়া স্টেশন থেকে শহরের যে কোনও মেট্রো স্টেশনে যাওয়া যাবে।

গত ৬ মার্চ গঙ্গার নীচের মেট্রোপথের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এসপ্ল্যানেড মেট্রো স্টেশন থেকে একাধিক মেট্রো প্রকল্পের উদ্বোধনের পর স্কুলপড়ুয়াদের সঙ্গে মেট্রো সফরও করেন তিনি। তবে উদ্বোধন হয়ে গেলেও কবে থেকে যাত্রীরা এই মেট্রোয় সফর করতে পারবেন, তা নিয়ে কৌতূহল ছিল। অবশেষে শনিবার দুপুরে কলকাতার মেট্রো ভবনে একটি সাংবাদিক বৈঠকে মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) জানিয়ে দিলেন, আগামী শুক্রবার সাধারণ যাত্রীদের জন্য খুলে যাবে মেট্রোর দরজা।

নদীর উপরের জলস্তর থেকে ৩৩ মিটার নীচে তৈরি হয়েছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জোড়া সুড়ঙ্গ। নদীখাতের থেকে আরও ১৩ মিটার গভীরে পলিমাটির ভিতর দিয়ে গিয়েছে সেগুলি। জোড়া সুড়ঙ্গের পেট চিরে ছুটবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। তবে জলে নেই সুড়ঙ্গ। রয়েছে নদীখাতের পলিমাটির মধ্যে। অর্থাৎ, মেট্রোযাত্রীদের মাথার উপর দিয়ে বয়ে যাবে গঙ্গা। কখন গঙ্গার নীচ দিয়ে ট্রেন ছুটছে সেটা জানা যাবে ট্রেনে বসেই। ৫২০ মিটার সুড়ঙ্গপথ পার হওয়ার সময়ে যাত্রীদের বিশেষ অনুভূতি দিতে নীল রঙের এলইডি আলো বসানোর কাজ শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে ওই পথটুকু পার হতে সময় লাগবে দেড় মিনিটেরও কম।

শুধু তা-ই নয়, গঙ্গা দিয়ে মেট্রো যাওয়ার সময় যাত্রীরা ফোনে কথা বলতে পারবেন। এ জন্য উচ্চমানের প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। নদীর তলায় মাটির গভীরে বসেছে অপটিক্যাল ফাইবার। তাই, ইন্টারনেটও ব্যবহার করা যাবে। গত ১ মার্চ হাওড়া ময়দান থেকে এসপ্ল্যানেড-সহ ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর বিভিন্ন স্টেশনের ভাড়ার তালিকা প্রকাশ করেন মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.