ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে ভারত গম রফতানি করে বিশ্ব বাজারে নিজের নাম প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল। রাশিয়া ও ইউক্রেনের ফেলে আসা শূন্যস্থান পূরণের লক্ষ্যে ভারত ‘গম কূটনীতি’ শুরু করেছিল। তবে এরই মাঝে দেশে তলানিতে গিয়ে ঠেকে গম উৎপাদন। এই আবহে দেশেই না খাদ্য সংকট দেখা দেয়, এই নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়। এই পরিস্থিতিতে এবার গম রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করল ভারত সরকার। পিটিআই সূত্রে খবর, অবিলম্বে আজকে থেকে গম রফতানি বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মার্চের মাঝামাঝি সময়ে দেশ জুড়ে তীব্র তাপপ্রবাহ দেখা দিয়েছিল। এর কারণে ভারতে গমের উৎপাদন হ্রাস পায়। এর জেরে গমের দাম রেকর্ড মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। এপ্রিলে গমের দাম ৬.৯৫% বেড়েছে। এরপরই শঙ্কা তৈরি হয়েছিল, ভারতকে আগামী দিনে গম রফতানি বন্ধ করতে হতে পারে। সেই আশঙ্কা সত্যি প্রমাণিত করে সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, এখন দেশ থেকে আর গম রফতানি করা যাবে না।
সরকারি পরিসংখ্যান অনুসারে, প্রায় ৮০ কোটি ভারতীয়র ভর্তুকিযুক্ত খাদ্য বিতরণের জন্য সরকারের নূন্যতম ৩০.৫ মিলিয়ন টন গম প্রয়োজন। তার পাশাপাশি অন্যান্য কল্যাণ প্রকল্পের জন্য গম লাগবে কেন্দ্রের। এই পরিস্থিতিতে গম রফতানি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। আপাতত দেশের চাহিদা মেটানোই মূল লক্ষ্য হতে চলেছে কেন্দ্রের।
ইউক্রেন যুদ্ধের আবহে গোটা বিশ্বে গমের চাহিদা বেড়েছে। মূলত রাশিয়া ও ইউক্রেন বিশ্বের অন্যতম বৃহত দুই গম রফতানিকারক দেশ। তবে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বহু দেশ। আবার ইউক্রেনে যুদ্ধ চলায় গম রফতানি করতে পারছে না সেই দেশ। এই আবহে ভারত শূন্য স্থান পূরণের লক্ষ্যে নেমেছিল। ভারত ২০২২-২৩ সালে রেকর্ড ১০ মিলিয়ন টন গম রফতানির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। গম রফতানি বাড়ানোর চেষ্টায় কেন্দ্রীয় সরকার মরক্কো, তিউনিসিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপিন্স, থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, তুরস্ক, আলজেরিয়া এবং লেবাননে একটি বাণিজ্য প্রতিনিধি দল পাঠাবে বলে জানিয়েছিল বৃহস্পতিবারই। তবে আপাতত ‘গম কূটনীতি’ জারি থাকলেও রফতানি বন্ধ থাকছে।