বুধবার রাজ্য বাজেটে কি ডিএ ঘোষণা, আশা এবং সংশয় কর্মী সংগঠনে

ডিএ নিয়ে প্রত্যাশার পারদ চড়ছে সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে। কারণ, রাজ্য বাজেটে ডিএ ঘোষণা করার নজির গত বছরেই রেখেছিল রাজ্য সরকার। ফলে আজ, বুধবার বিধানসভায় পেশ হতে চলা রাজ্যের (২০২৫-২৬ তথা আগামী আর্থিক বছরের জন্য) বাজেটে একই ঘোষণা হয় কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে। তবে ঘোষণা হলেও, কেন্দ্রের সঙ্গে ডিএ-র ফারাক কতটা মিটবে, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে বিরোধী কর্মচারী সংগঠনগুলির মধ্যে।

গত অর্থবর্ষের বাজেটে (২০২৪-২৫) ৪% ডিএ ঘোষণা করেছিলেন অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তার আগের জানুয়ারি থেকেও ৪% হারে ডিএ দেওয়া শুরু করেছিল রাজ্য। ফলে একই বছরে দু’বার ডিএ (মোট ৮%) ঘোষণা হওয়ায় কিছুটা আশার আলো দেখেছিলেন কর্মচারীরা। তবে চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত ডিএ ঘোষণা করেনি সরকার। ইতিমধ্যে কেন্দ্র তাদের কর্মচারীদের ডিএ দিয়ে দেওয়ার ফলে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীদের সঙ্গে রাজ্যের কর্মীদের ব্যবধান বেড়ে হয়েছে ৩৯ শতাংশ বিন্দু (রাজ্যের ডিএ ১৪% এবংকেন্দ্রের ৫৩%)।

সরকারি সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, ২০২৩-২৪ সালের বাজেটে বেতন এবং পেনশন খাতে যে বরাদ্দের ঘোষণা হয়েছিল, তা কিছুটা বৃদ্ধি পেয়ে (ডিএ বাবদ অতিরিক্ত খরচের কারণে) ওই বছরের সংশোধিত হিসাবে সেই খরচ হয়েছিল মোট প্রায় ৮৯ হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে বেতন, মজুরি এবং ভাতা বাবদ সরকারের খরচ হয়েছিল প্রায় ৬৫ হাজার কোটি এবং পেনশন ও অন্যান্য অবসরকালীন সুবিধা দিতে তা ছিল প্রায় ২৪ হাজার কোটি টাকা। ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের বাজেটে বেতন-পেনশন খাতে বরাদ্দের প্রস্তাব আরও বাড়িয়ে করা হয়েছে প্রায় ৯১ হাজার কোটি টাকা। অনেকের অনুমান, আসন্ন বাজেটে ডিএ ঘোষণা করতে হলে আগামী আর্থিক বছরের জন্য এই খাতে বরাদ্দ আরও বাড়াতে হবে।

কর্মচারী সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, গত প্রায় ১০ বছর ধরে ডিএ মামলা আদালতে রয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে মামলার রায় কর্মচারীদের পক্ষে গেলেও, সুপ্রিম কোর্টে তার নিষ্পত্তি হয়নি এখনও। অন্যতম মামলাকারী সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ়ের সভাপতি শ্যামল কুমার মিত্রের অভিযোগ, উপযুক্ত হারে ডিএ না দিয়ে বিপুল অর্থ সাশ্রয় করছে রাজ্য সরকার। অথচ কর্মচারীদের বিভিন্ন স্তরে প্রতি মাসে লোকসান হচ্ছে অনেকটা পরিমাণ অর্থ। তাঁর কথায়, “রাজ্য সরকার নিজেরাই স্বীকার করেছে, ডিএ না দিয়ে সেই অর্থ উন্নয়নে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১১ সালের জুন মাস থেকে ২০২৪ সালের এপ্রিল পর্যন্ত ডিএ-খাতে সরকার সাশ্রয় করেছে ২ লক্ষ ১৯ হাজার কোটি টাকা। ডিএ-র টাকায় উন্নয়ন হয়ে থাকলে তার কৃতিত্ব নিজে না নিয়ে কর্মচারীদের দেওয়া উচিত মুখ্যমন্ত্রীর।” অপর মামলাকারী সংগঠন রাজ্য কর্মচারী পরিষদের সভাপতি দেবাশিস শীলের বক্তব্য, “রাজ্য বাজেটে ডিএ বাড়লেও, তা হবে সামান্যই। বেশি ব্যবধান থেকেই যাবে। তা কমানো এবং সপ্তম বেতন কমিশন গঠনের আশা থাকবে বাজেট থেকে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.