মোদী-ট্রাম্পের বন্ধুত্বের নেপথ্যে কোন কারণ? ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী জয়শঙ্কর

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে চর্চা বিশ্ব মহলে। দুই রাষ্ট্রনেতাই একে অপরকে ‘বন্ধু’ বলে পরিচয় দেন। কিন্তু তাঁদের বন্ধুত্বের নেপথ্যে কী কারণ, তা নিয়েও কৌতূহল রয়েছে। শনিবার মোদী-ট্রাম্পের সম্পর্কের রসায়নের ব্যাখ্যা দিলেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তাঁর মতে, জাতীয়তাবাদীরাই একে অপরকে এ ভাবে সম্মান করতে পারেন! শুধু তা-ই নয়, অনুদান বিতর্ক নিয়েও মুখ খুলেছেন তিনি।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাহিত্য উৎসবে অতিথি হিসাবে শনিবার উপস্থিত ছিলেন জয়শঙ্কর। সেই অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করতে উঠে মোদী-ট্রাম্পের বন্ধুত্বের কথা টেনে আনেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘মোদী এক জন অত্যন্ত শক্তিশালী জাতীয়তাবাদী। আর ট্রাম্পও কিছুটা সেই ধরনের মনোভাবই প্রকাশ করেন। আমি মনে করি, অনেক দিন থেকেই জাতীয়তাবাদীরা একে অপরকে এ ভাবেই সম্মান করেন।’’

আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয় বার শপথ নেওয়ার পরেই অনেক রাষ্ট্রনেতাকে আমন্ত্রণ করেন। সেই তালিকায় প্রথম দিকেই নাম ছিল মোদীর। সেই কথা উল্লেখ করেছেন জয়শঙ্কর। একই সঙ্গে মার্কিন সফরে মোদী এবং ট্রাম্পের মধ্যে হওয়া বৈঠক ইতিবাচক বলেও ব্যাখ্যা করেন তিনি। পাশাপাশি, জয়শঙ্কর এ-ও মনে করিয়ে দেন, বিশ্বে এমন অনেক নেতা আছেন যাঁদের সঙ্গে ট্রাম্পের ইতিবাচক সম্পর্ক নেই। কিন্তু মোদীর ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।

ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধি করতে আমেরিকা অনুদান দিয়েছে, এমন দাবিকে কেন্দ্র করে শোরগোল পড়েছে বিশ্ব কূটনৈতিক মহলে। এই দাবি করেছেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ‘ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠ’ শিল্পপতি ইলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন মার্কিন দক্ষতা বিষয়ক দফতর সম্প্রতি জানায়, ভারতে ভোটের হার বৃদ্ধি করতে প্রায় ১৮২ কোটি টাকা (২ কোটি ১০ লক্ষ ডলার)-র অনুদান বন্ধ করতে চলেছে তারা। এর পর একাধিক বার ট্রাম্প ভারতের জন্য এই বিপুল পরিমাণ অর্থ খরচের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। সেই প্রসঙ্গে এ বার উদ্বেগপ্রকাশ করলেন জয়শঙ্কর। তাঁর কথায়, ‘‘মার্কিন প্রশাসন যা তথ্য প্রকাশ করেছে, তা উদ্বেগের। নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়েই এ ধরনের কাজ করা হয়েছে, তেমনই ইঙ্গিত দেয়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি। আমার ধারণা, আসল তথ্য প্রকাশ্যে আসবেই।’’

ট্রাম্প নতুন করে ক্ষমতায় আসার পরে বিভিন্ন দেশে ‘ইউনাইটেড স্টেটস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট’ (ইউএসএড)-এর পক্ষ থেকে দেওয়া আর্থিক অনুদান বন্ধ করে দেন। সেই প্রসঙ্গে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী বলেন, ‘‘ইউএসএড-কে সরল বিশ্বাসে এখানে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখন আমেরিকা থেকে বলা হচ্ছে খারাপ উদ্দেশ্য নিয়ে কিছু কাজকর্ম হয়েছে। অবশ্যই তা দেখা উচিত।’’ প্রসঙ্গত, অনুদান বিতর্কে এর আগে বিজেপি দাবি করেছিল, বিদেশি সাহায্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হারানোর চেষ্টা করেছেন রাহুল গান্ধী। অন্য দিকে কংগ্রেস দাবি তুলেছে, ইউএসএডের ভারতে কাজকারবার নিয়ে মোদী সরকার সংসদে শ্বেতপত্র পেশ করুক।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.