২৬ হাজার চাকরির ভবিষ্যৎ কী, যোগ্য-অযোগ্য বাছাইয়ের জট কাটবে কী ভাবে? বৃহস্পতিবার রায় ঘোষণা, জানাল সুপ্রিম কোর্ট

স্কুল সার্ভিস কমিশনের (এসএসসি) ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার রায় বৃহস্পতিবার ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খন্না এবং বিচারপতি সঞ্জয় কুমারের বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতেই শুনানি শেষ করে রায় ঘোষণা স্থগিত রেখেছিল আদালত। বুধবার জানানো হল, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ এই মামলার রায় ঘোষণা করবে।

এসএসসি-র শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। কলকাতা হাই কোর্ট এই সংক্রান্ত শুনানির পর ২০১৬ সালের সম্পূর্ণ নিয়োগ প্রক্রিয়াই বাতিল করে দিয়েছিল। এর ফলে ২৫,৭৫৩ জনের চাকরি যায়। পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে। গত ১০ ফেব্রুয়ারি শীর্ষ আদালতে শেষ হয় এই মামলার শুনানি। বুধবার সুপ্রিম কোর্ট যে তালিকা প্রকাশ করেছে, তাতে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে ২৬ হাজার চাকরি বাতিল মামলার রায় ঘোষণা করা হবে।

২৬ হাজার চাকরি বাতিলের এই মামলায় একাধিক জটিলতা রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম হল যোগ্য এবং অযোগ্যদের বাছাইয়ের সমস্যা। কী ভাবে যোগ্য এবং অযোগ্যদের আলাদা করা হবে, সেই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। শুনানির শেষ দিন পর্যবেক্ষণে আদালত জানিয়েছিল, এই মামলায় আসল তথ্য জানা প্রায় অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। যে হেতু আসল উত্তরপত্র বা ওএমআর শিট উদ্ধার করা যায়নি, তাই কোন ওএমআর শিটকে আসল বলে ধরে নেওয়া হবে, তা নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। এসএসসিকে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে কমিশনের আইনজীবী জানিয়েছিলেন, ‘র‌্যাঙ্ক জাম্প’ এবং প্যানেল-বহির্ভূত নিয়োগের তথ্য তাঁদের কাছে রয়েছে। কিন্তু ওএমআর শিট কারচুপির তথ্য কমিশনের কাছে নেই।

সিবিআইয়ের বক্তব্য, এসএসসির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে। সাদা খাতা জমা দিয়েই অনেকে চাকরি পেয়ে গিয়েছেন। তাই ২৬ হাজার চাকরি বাতিলের এই মামলায় হাই কোর্টের রায় বহাল থাকা উচিত। অন্য দিকে, রাজ্য সরকারের তরফে আদালতে জানানো হয়, এত জন শিক্ষকের চাকরি একসঙ্গে বাতিল করা হলে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে পড়তে পারে।

কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক এবং বিচারপতি মহম্মদ শব্বর রশিদির ডিভিশন বেঞ্চ ২০১৬ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করে রায় দিয়েছিল। যাঁরা মেয়াদ-উত্তীর্ণ প্যানেলে চাকরি পেয়েছিলেন, যাঁরা সাদা খাতা জমা দিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন, তাঁদের বেতন ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। চার সপ্তাহের মধ্যে ১২ শতাংশ হারে সুদ-সহ বেতন ফেরত দিতে বলা হয় ওই চাকরিপ্রাপকদের। হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে পৃথক ভাবে শীর্ষ আদালতে মামলা করে রাজ্যের শিক্ষা দফতর, এসএসসি এবং মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। দফায় দফায় মামলা করেন চাকরিহারারাও। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট চাকরি বাতিলে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে শীর্ষ আদালতের রায় জানা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.