বিরতিতে ডাগ আউটে বসে হাই তুলছিলেন গৌতম গম্ভীর। দেখে বোঝা যাচ্ছিল, ঘুম পেয়েছে ভারতের প্রধান কোচের। অভিষেক শর্মা, শুভমন গিলকে হয়তো বললেন, তাড়াতাড়ি খেলা শেষ করে ফিরতে। সেটাই করলেন তাঁরা। যে ঘুমপাড়ানি ক্রিকেট সংযুক্ত আরব আমিরশাহি খেলল, তাতে গম্ভীরের ঘুম পাওয়া স্বাভাবিক। আমিরশাহি যে ভারতের কাছে হারবে তা নিশ্চিত ছিল। সেই কারণেই হয়তো ভারত খেললেও গ্যালারির অনেকটাই ফাঁকা ছিল। কিন্তু এ ভাবে হারবে তা ভাবা যায়নি। আমিরশাহিকে নিয়ে ছেলেখেলা করল ভারত। প্রায় ১৬ ওভার বাকি থাকতে ৯ উইকেট ম্যাচ জিতল ভারত।
টস জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন ভারত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। ১৫ ম্যাচ পর টস জিতে বেশি পরীক্ষার চেষ্টা করেননি তিনি। সূর্য যদি প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিতেন তা হলে হয়তো আরও একটু বেশি খেলা হত। কিন্তু ভারতীয় বোলারদের দাপটে তা আর হল না।
শুরুটা খারাপ করেনি আমিরশাহি। ওপেনার আলিশান শরাফু পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে কয়েকটি বড় শট মারেন। কিছুটা সঙ্গ দেন অধিনায়ক মহম্মদ ওয়াসিম। আশ্চর্যের বিষয়, ভারতীয় বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান দিলেন জসপ্রীত বুমরাহ। যদিও আমিরশাহিকে প্রথম ধাক্কা দিলেন তিনিই। বুমরাহের ইয়র্কারের জবাব ছিল না শরাফুর কাছে।
তৃতীয় ওভারেই স্পিনার নিয়ে আসেন অধিনায়ক সূর্য। এক বার দুই প্রান্ত থেকে স্পিন আক্রমণ শুরু হওয়ার পর কিচ্ছু করার ছিল না আমিরশাহির ব্যাটারদের। কুলদীপ যাদব, বরুণ চক্রবর্তীদের বল বুঝতেই পারলেন না তাঁরা। কোনটা লেগ স্পিন, কোনটা রং ওয়ান, কিছুই ধরতে পারছিলেন না রাহুল চোপড়া, আসিফ খানেরা। আন্দাজে ব্যাট চালালেন তাঁরা। তার ফলে যা হওয়ার তা-ই হল।
এক সময় ৮ ওভারে ৪৭ রানে ২ উইকেট ছিল আমিরশাহির। পরের ৫.১ ওভারে ১০ রানে ৮ উইকেট পড়ে গেল। তার মধ্যে ৪ উইকেট নিলেন কুলদীপ। ৩ উইকেট নিলেন শিবম দুবে। বরুণ, কুলদীপ ও শিবম দুই অঙ্কের রানও দেননি। বরুণ ২ ওভারে ৪, কুলদীপ ২.১ ওভারে ৭ ও শিবম ২ ওভারে ৪ রান দিলেন। ভারতের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টিতে সবচেয়ে কম রানে অল আউট হল আমিরশাহি।
৫৮ রান করতে যে ভারতের বেশি সময় লাগবে না তা নিশ্চিত ছিল। প্রশ্ন ছিল, পাওয়ার প্লে-র মধ্যে কি খেলা শেষ করতে পারবে ভারত। অভিষেক ও শুভমনকে দেখে মনে হল, সাজঘর থেকে তৈরি হয়ে এসেছেন। প্রথম বলেই ছক্কা মেরে শুরু করলেন তিনি। ৩০ রান করে ছক্কা মারতে গিয়ে অভিষেক আউট হলেও পাওয়ার প্লে-র মধ্যেই খেলা শেষ করে দিল ভারত। ৫৮ রান করতে মাত্র ২৭ বল নিল তারা।
রবিবার ভারতের সামনে পাকিস্তান। এশিয়া কাপের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। এই মাঠেই দু’দলের খেলা হবে। সেই ম্যাচের আগে ব্যাটে-বলে ভারত যে রকম ছন্দে রয়েছে তাতে এখন থেকেই মাথা ব্যথা শুরু হয়ে গিয়েছে সলমন আলি আঘাদের।