ডাকেটকে আউট করে কানে কানে কী বলেছিলেন? ওভাল টেস্টের ছ’দিন পর প্রকাশ্যে আনলেন আকাশদীপ

ওভাল টেস্টে শিরোনামে উঠে এসেছিল আকাশদীপ এবং বেন ডাকেটের ঝামেলা। ইংরেজ ব্যাটারকে আউট করার পর কাঁধে হাত দিয়ে বিদায় জানান ভারতের পেসার, যা অনেকেই ভাল ভাবে নেননি। আকাশদীপ আউট হওয়ার সময়ে একই কাজ করেন ডাকেট। তবে চর্চা বেশি হয়েছে প্রথম ঘটনাটা নিয়েই। ঠিক কী নিয়ে দু’জনের ঝামেলা লেগেছিল, তা টেস্টের ছ’দিন পর প্রকাশ্যে আনলেন আকাশদীপ।

‘রেভস্পোর্টজ়’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আকাশদীপ বলেছেন, “ডাকেটের বিরুদ্ধে আমার রেকর্ড বেশ ভাল। ওকে কয়েক বার আউট করেছি। তা ছাড়া বাঁহাতিদের বিরুদ্ধে সব সময়ে সুযোগ কাজে লাগাতে চাই। ও-ও আলাদা নয়। সে দিন ডাকেট চেষ্টা করছিল আমার লাইন-লেংথ নষ্ট করে দিতে। সুইপ, রিভার্স সুইপের মতো অন্য ধরনের শট খেলছিল। তখনই আমাকে এসে বলেছিল, ওটা ওর দিন। আমি ওকে আউট করতে পারব না।”

আকাশদীপ মেনে নিয়েছেন যে ডাকেটের ওই রকম শট খেলায় তিনি চাপে পড়েছিলেন। বাংলার পেসার বলেছেন, “সত্যিটা হল, ব্যাটার যদি ক্রিজ়‌ে বেশি নড়াচড়া করে এবং ওই ধরনের শট খেলে তা হলে লাইন-লেংথে প্রভাব পড়বেই। কারণ আপনি আগে থেকে ধরতেই পারবেন না ব্যাটার কী করতে চলেছে। সেটাই হচ্ছিল ওই সময়। তা ছাড়া ইংল্যান্ড দ্রুত রান তুলছিল এবং আমাদের একটা উইকেট দরকার ছিল।”

শেষ পর্যন্ত ডাকেটকে আউট করে তাঁর গলা জড়িয়ে কানে কানে কিছু বলতে দেখা যায় আকাশদীপ। কী বলেছিলেন তিনি? হাসতে হাসতে বাংলার পেসার বলেছেন, “আমাদের খুব বেশি রান ওঠেনি। তাই ওকে আউট করার পর গিয়ে বলেছিলাম, ‘কখনও তুমি ফস্কাবে, আমি উইকেট পাব। সব সময় তুমি জিতবে না। এ বার আমি জিতেছি’। আসলে ও যে কথাটা বলেছিল সেটাই ফিরিয়ে দিয়েছিলাম। পুরোটাই হয়েছে ক্রিকেটীয় সংস্কৃতি মেনে।”

যদিও আকাশদীপ এই আচরণ অনেকেই ভাল ভাবে নেননি। ঘটনার পর সম্প্রচারকারী চ্যানেলে ধারাভাষ্য দিতে গিয়ে রিকি পন্টিং বলেন, “প্রথমে দেখে তো ভেবেছিলাম ওরা বন্ধু। প্রতি দিন এই ছবি দেখা যায় না। পাড়ার পার্কে দেখা যেতে পারে। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নয়। ডাকেটের খেলা দেখে আমার ভাল লাগে। কিন্তু ও যে ভাবে নির্লিপ্ত থাকল তাতে ওর প্রতি শ্রদ্ধা আমার বেড়ে গিয়েছে।” সে কথা শুনে আর এক ধারাভাষ্যকার ইয়ান ওয়ার্ড বলেন, “আমি কয়েক জনের কথা মনে করতে পারছি যারা এই পরিস্থিতিতে থাকলে ঘটনাটা অন্য রকম হত। তার মধ্যে তুমিও একজন। তুমি থাকলে কি পন্টিংয়ের ডান হাতের ঘুষিটা দেখা যেত?” জবাবে পন্টিং বলেন, “অবশ্যই।”

ইংল্যান্ডের সহকারী কোচ মার্কাস ট্রেসকোথিক জানিয়েছিলেন, ডাকেটের জায়গায় তিনি নিজে থাকলে কনুইয়ের গুঁতো মারতেন আকাশদীপকে। ম্যাচের পর সাংবাদিক বৈঠকে ট্রেসকোথিক বলেন, “আমি এটুকু বলতে পারি, আমাদের সময়ের বেশ কয়েক জন ব্যাটার ওই পরিস্থিতিতে আকাশদীপকে কনুইয়ের গুঁতো মারত। তার মধ্যে আমিও একজন। আউট করার পর কোনও বোলারকে ওই ভাবে গলা জড়িয়ে ধরতে আমি কোনও দিন দেখিনি। অনেকে মুখে অনেক কিছু বলে। কিন্তু ওই কাজ করে না।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.