বিভিন্ন সময়ে বিমান দুর্ঘটনা নিয়ে অনেকের মনে যেমন শঙ্কার মেঘ জমে, তেমনই আগ্রহ তৈরি হয় বিমানের নিরাপত্তার খুঁটিনাটি নিয়ে জানারও। ‘মে-ডে’, ‘প্যান প্যান’ এমন অনেক শব্দের সঙ্গেই এখন পরিচিত অনেক সাধারণ যাত্রীই। তেমনই একটি বিষয় হল মেঘ। বিমান আকাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মেঘ থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু এমন পরিস্থিতিও আসে যখন সেই মেঘের মধ্যে দিয়ে কার্যত ‘যুদ্ধ’ করে বিমান এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় চালকদের। অত্যন্ত সতর্ক থাকতে হয়। কিন্তু কেন?
সম্প্রতি একটি পডকাস্টে এই ব্যাপারেই জানালেন দক্ষেশ চৌহান। বায়ুসেনার আধিকারিক দক্ষেশ জানাচ্ছেন, কখনও কোনও কোনও মেঘ বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। মেঘের মধ্যে যদি বজ্রপাত হয় বিমানের বৈদ্যুতিক যন্ত্র বিকল হয়ে যেতে পারে। সেই কারণেই মেঘ দেখলে সতর্ক হতে হয় চালকদের।
বিমানচালকদের নিরপত্তা এবং ভাল-মন্দ নিয়ে কাজ করা একটি সংস্থার সাধারণ সম্পাদক অনিল রাও জানাচ্ছেন, ‘‘মেঘ মানে শুধু জলকণার সমষ্টি নয়, তার আড়ালেই লুকিয়ে থাকে বিপদ! বিমানচালকদের কাছে এমন মেঘের মধ্যে দিয়ে বিমান ওড়ানো চ্যালেঞ্জেরও। প্রতি মুহূর্তে ঝুঁকি থাকে। সে কারণে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে নজর দিতে হয়, সতর্কও থাকতে হয়।’’
মেঘের মধ্যে কোন বিপদ ওত পেতে থাকে?
দৃশ্যমানতার অভাব: মেঘ কখনও এত ঘন হয় যে দেখতে অসুবিধা হয়। বিমান ওড়ানোর সময় দৃশ্যমানতা কমে গেলে বিপদ বাড়ে। চালক ঠিকমতো চারপাশ দেখতে না পেলে স্বাভাবিক ভাবেই সমস্যা হয়। শুধুমাত্র যন্ত্রের উপর নির্ভর করতে হয় এমন সময়।
বজ্রগর্ভ মেঘ: বিপদ বাড়ে বজ্রগর্ভ মেঘে। এমন মেঘে বিদ্যুৎ চমকায় খুব বেশি। বৈদ্যুতিক তরঙ্গ বিমানের কলকব্জাও বিকল করে দিতে পারে। এমন মেঘে শিলাবৃষ্টি, প্রবল বৃষ্টি হয়। এই পরিস্থিতি পড়লে বিমান দুলতে থাকে, ঝাঁকুনি অনুভব হয়, কষ্টকর হয়ে ওঠে বিমানযাত্রা। বজ্রগর্ভ মেঘের মধ্যে দিয়ে বিমান নিয়ে যাওয়া কার্যত যুদ্ধের শামিল।
বরফ: অধিক উচ্চতায় মেঘ থেকে বৃষ্টি হয় না, বরফ পড়ে। বরফ বিমানের ডানায় জমতে থাকলে ভার বেড়ে যায়, বাতাসের বাধা কাটিয়ে ওড়ানো মুশকিল হয়ে যায়।
বাতাসের বেগ: মেঘের সঙ্গে যদি ঝোড়ো বাতাস থাকে তা হলেও সমস্যা হয়। বাতাসের দ্রুত বেগের ফলে, আচমকা অধিক উচ্চতা থেকে বিমান নেমেও আসতে পারে। নির্দিষ্ট উচ্চতা এবং অভিমুখে চালাতেও সমস্যা হয়।