‘আমেরিকা নয়, অন্যত্র বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করব’, ট্রাম্পকে বার্তা কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী কার্নের

কানাডার নতুন প্রধানমন্ত্রী হলেন মার্ক কার্নে। আর কুর্সিতে বসেই প্রতিবেশী আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বার্তা দিলেন তিনি। কার্নে জানিয়েছেন, আমেরিকা থেকে হুমকি এলে তার মোকাবিলা করতে নতুন পরিকল্পনা প্রয়োজন। অন্যত্র নতুন বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করবেন বলেও জানিয়েছেন জাস্টিন ট্রুডোর উত্তরসূরি।

ট্রুডোর ইস্তফার পর কানাডার লিবারাল পার্টির ১ লক্ষ ৪০ হাজারের বেশি সদস্য নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের জন্য ভোট দিয়েছিলেন। তাতে ৮৫.৯ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন কার্নে। রবিবার দায়িত্ব নিয়েই আমেরিকা প্রসঙ্গে কার্নে বলেন, ‘‘নতুন হুমকি এলে তো নতুন ধরনের ভাবনা এবং পরিকল্পনা দরকার হয়। আমরা আরও নির্ভরযোগ্য দেশের সঙ্গে নতুন করে বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করব।’’ আমেরিকা তাদের পণ্যে বাড়তি শুল্ক আরোপ করলে কানাডাও পাল্টা কর চাপাবে, সাফ জানিয়ে দিয়েছেন কার্নে। তিনি বলেন, ‘‘আমেরিকানরা যত দিন না আমাদের সম্মান করছে, তত দিন পারস্পরিক শুল্ক থাকবে।’’

আমেরিকায় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই কানাডা এবং মেক্সিকোর বিরুদ্ধে একের পর এক পদক্ষেপ করেছেন ট্রাম্প। সীমান্ত পেরিয়ে সেখানকার বাসিন্দাদের আমেরিকায় অনুপ্রবেশ থেকে শুরু করে বাড়তি শুল্ক আরোপ, একাধিক বিষয়ে কানাডা এবং আমেরিকার সম্পর্কের উত্তাপ বেড়েছে। কার্নে জানান, ট্রাম্প কানাডা দখল করে নিতে চাইছেন। সেই উদ্দেশ্য সফল হতে দেওয়া যাবে না। তাঁর কথায়, ‘‘আমেরিকানরা আমাদের জল, আমাদের জমি, আমাদের যাবতীয় সম্পদ লুটে নিতে চায়। ওরা আমাদের দেশটাকেই চায়। ট্রাম্প কানাডার শ্রমিক, তাঁদের পরিবার এবং কানাডার বাণিজ্যকে বার বার আক্রমণ করছেন। ওঁকে সফল হতে দেওয়া যাবে না।’’ কার্নের বিশ্বাস, হকির পাশাপাশি বাণিজ্যের মাঠেও আমেরিকাকে হারিয়ে দেবে কানাডা।

ব্যাঙ্ক অফ কানাডা এবং ব্যাঙ্ক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর ছিলেন কার্নে। ৫৯ বছর বয়সি এই অভিজ্ঞ অর্থনীতিবিদকে কানাডার লিবারাল পার্টি নেতা হিসাবে নির্বাচন করেছে। রবিবার (স্থানীয় সময়) লিবারাল পার্টির এই নির্বাচনের ফল প্রকাশিত হয়। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেন কার্নে। গত জানুয়ারিতে এই পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন ট্রুডো। এত দিনে তাঁর দল নতুন প্রধানমন্ত্রী বাছল। যদিও কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে কার্নের মেয়াদ বেশি দিনের নয়। শীঘ্রই তাঁকে সাধারণ নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। অক্টোবর মাসের মধ্যে কানাডায় ভোট হওয়ার কথা। তবে প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে বসার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেও নির্বাচন ডাকতে পারেন কার্নে। তিনি ভোটের আয়োজন না-করলে বিরোধীরা তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাবও আনতে পারেন। কানাডার একাধিক জনমত সমীক্ষায় সাধারণ নির্বাচনে কনজ়ারভেটিভ পার্টিকেই এগিয়ে রাখা হচ্ছে। ফলে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে লিবারালদের ফেরার সম্ভাবনা কম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.