কসবায় স্ত্রী, পুত্রকে নিয়ে কি আত্মঘাতী হয়েছেন বৃদ্ধ! মৃত সরজিৎ ভট্টাচার্যের ফ্ল্যাট থেকে একটি সুইসাইড নোট পুলিশ উদ্ধার করেছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই চিঠিতে লেখা রয়েছে, তাঁরা ‘স্বেচ্ছায়’ পৃথিবী ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কসবার রাজডাঙা গোল্ড পার্কের ফ্ল্যাট থেকে সরজিৎ, তাঁর স্ত্রী গার্গী এবং পুত্র আয়ুষ্মানের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। গার্গী এবং আয়ুষ্মানের শরীরে ক্ষতচিহ্ন মিলেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সরজিৎ জমি, বাড়ির দালালির কাজ করতেন। এমনিতে বাড়ির বাইরে খুব একটা দেখা যেত না তাঁকে। তিনি এবং তাঁর পুত্র সকালে জল আনতে যেতেন। সরজিৎ মাঝেমধ্যে দোকানে যেতেন। তা ছাড়া তাঁদের পরিবারের কাউকে খুব একটা বাইরে বার হতে দেখা যেত না বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। প্রতিবেশীদের একাংশ জানিয়েছেন, ৩৮ বছরের আয়ুষ্মানের পায়ে সমস্যা ছিল। তিনি পা টেনে টেনে হাঁটতেন।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কসবা থানায় খবর দেন স্থানীয়েরা। পুলিশকে তাঁরা জানান, ৫০ নম্বর রাজডাঙা গোল্ড পার্কের ওই ফ্ল্যাটবাড়ির তৃতীয় তলের বাসিন্দারা মঙ্গলবার সকাল থেকে দরজা খোলেননি। খবর শুনে ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশ। তারা গিয়ে দেখে, ফ্ল্যাটের কোলাপসিবল গেট ভিতর থেকে তালা দেওয়া রয়েছে। গেটের পিছনে রয়েছে কাঠের দরজা। সেটিও বন্ধ। এর পর পুলিশ দরজা ভেঙে ফ্ল্যাটের ভিতরে প্রবেশ করে দেখে, হলে সিলিং ফ্যান থেকে ঝুলছে সরজিতের দেহ। ভিতরের ঘরে তাঁর স্ত্রী গার্গী এবং পুত্র আয়ুষ্মানের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। গার্গীর বয়স ৬৮ বছর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গার্গী এবং আয়ুষ্মানের শরীরে কাটা দাগ রয়েছে। চিকিৎসক এসে তিন জনকেই মৃত বলে ঘোষণা করেছেন। তাঁদের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মিললে বোঝা যাবে মৃত্যুর আসল কারণ। ফ্ল্যাটের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ ছিল। সুইসাইড নোটও মিলেছে ঘটনাস্থল থেকে। সে কারণে পুলিশের একাংশ মনে করছে, পরিবারের সদস্যেরা আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন। তবে মা এবং পুত্রের শরীরে ক্ষতচিহ্ন ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের। তিন জনে একই সঙ্গে আত্মঘাতী হয়েছেন, নাকি দু’জনকে খুন করে কোনও এক জন আত্মঘাতী হয়েছেন, তা পুলিশ খতিয়ে দেখছে বলে খবর।