পুতিনের মদতে কি পরমাণু অস্ত্র বানানোর চেষ্টা চলছিল সিরিয়ায়? মরু এলাকা পর্যবেক্ষণের পর ইঙ্গিত দিল রাষ্ট্রপুঞ্জের রিপোর্ট

ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের জমানায় গোপনে পরমাণু অস্ত্র বানানোর চেষ্টা চলছিল সিরিয়ায়? রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত ‘আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা’ (আইএইএ)-র সাম্প্রতিক রিপোর্টে এমনই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে।

গৃহযুদ্ধে পালাবদলের পরে সিরিয়ায় গিয়েছিল আইএইএ-র প্রতিনিধিদল। সংগঠনের মুখপাত্র ফ্রেডরিক ডাহল জানিয়েছেন, দেইর এল-জ়োর মরুভূমির দুর্গম তিনটি স্থান পর্যবেক্ষণ করেছেন তাদের প্রতিনিধিরা। আসাদের জমানায় সেখানে গোপন পরমাণুকেন্দ্র ছিল বলে খবর পেয়েই পর্যবেক্ষণকারী দল পাঠানো হয়েছিল। ওই এলাকাগুলি থেকে সংগৃহীত নমুনায় ইউরেনিয়ামের উপস্থিতি মিলেছে বলে জানান ফ্রেডরিক।

আসাদের সরকারের সঙ্গে নিবিড় সামরিক সখ্য ছিল রাশিয়ার। ফলে সিরিয়ার গোপন পরমাণু কর্মসূচির নেপথ্যে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মদত ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই। প্রসঙ্গত, গত ডিসেম্বরে সিরিয়ায় বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) এবং তাদের সহযোগী ‘জইশ আল-ইজ্জা’র যৌথবাহিনীর রাজধানী দামাস্কাস দখল এবং প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকারের পতন ঘটেছিল। আসাদ সপরিবার পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন মিত্র দেশ রাশিয়ায়।

সেই গৃহযুদ্ধে আসাদ বিরোধী বাহিনীতে আইএস সন্ত্রাসবাদীদের একাংশ শামিল ছিলেন বলে অভিযোগ। অথচ এইচটিএস বাহিনীকে ধারাবাহিক মদত দিয়েছিল আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটোর সদস্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিচেপ তায়িপ এর্ডোগানের সরকার। এর পরে চলতি বছরের জুলাই মাসের গোড়ায় সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা কুর্দের আবেদন মেনে প্রাক্তন জঙ্গিদের সরকারি সেনার অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে ছাড়পত্র দিয়েছিলেন ট্রাম্প স্বয়ং। তবে ক্ষমতার পালাবদলের পরেই আমেরিকার মিত্র ইজ়রায়েল গোলান উপত্যকার পার্শ্ববর্তী কিছু সিরিয় ভূখণ্ডের দখল নিয়েছে বলে অভিযোগ।

প্রসঙ্গত, মে মাসে ইরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধিকরণ কর্মসূচি নিয়েও ‘পরমাণু বোমা বানানোর আশঙ্কা’ প্রকাশ করেছিল রাষ্ট্রপুঞ্জের সংস্থা আইএইএ। তার পরেই ১২ জুন রাতে ইরানের বিভিন্ন শহর ও পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়েছিল ইজ়রায়েলি যুদ্ধবিমান। যার নাম ছিল ‘অপারেশন রাইজ়িং লায়ন’। প্রতিক্রিয়ায় ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইজ়রায়েলে। ১২ দিনের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর ২৪ জুন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হস্তক্ষেপে যুদ্ধবিরতি হয়েছিল। তার আগেই অবশ্য ২১ জুন গভীর রাতে মার্কিন ‘স্টেল্‌থ’ বোমারু বিমান ‘বি-২ স্পিরিট’ ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্র— নাতান্‌জ়, ফোরডো এবং ইসফাহানে জিবিইউ-৫৭ (বাঙ্কার ব্লাস্টার সিরিজ়ের সবচেয়ে শক্তিশালী বোমা) ফেলেছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.