‘মাংস-রুটি’ খেতে চেয়েছিলেন! পুলিশ ব্যবস্থা করতেই ঈশিতার খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রের ঠিকানা জানালেন দেশরাজ

কৃষ্ণনগরের ঈশিতা মল্লিককে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র কোথায় লুকিয়ে রেখেছেন, শেষ পর্যন্ত পুলিশকে তা জানালেন অভিযুক্ত দেশরাজ সিংহ। পুলিশ সূত্রে খবর, কোতোয়ালি থানার একটি দল দেশরাজকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর বলে দেওয়া ঠিকানায় শুক্রবার রাতেই তল্লাশি চালায়। অন্ধকার ডোবা থেকে উদ্ধার হয় ঈশিতার খুনে ব্যবহৃত সেভেন এমএম পিস্তলটি। উদ্ধার হওয়া পিস্তল দিয়েই ঈশিতাকে খুন করেছেন বলে স্বীকার করেন দেশরাজ। গোটা প্রক্রিয়ার ভিডিয়ো তুলেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া অস্ত্র দু’-এক দিনের মধ্যে ফরেনসিক বিভাগে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ। ঈশিতার ঘরে উদ্ধার হওয়া গুলির খোলের সঙ্গে পিস্তলটির মিল রয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করবে ফরেনসিক বিভাগ।

পুলিশ সূত্রে খবর, শুক্রবার সন্ধ্যায় মাংস-রুটি খেতে চেয়েছিলেন ঈশিতার খুনে অভিযুক্ত দেশরাজ। তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তের আবদার মেটায় পুলিশ। কৃষ্ণনগর সদরের একটি হোটেল থেকে নিয়ে আসা হয় চারটি রুটি এবং চার টুকরো মুরগির মাংস। খাওয়া শেষ হলে দেশরাজকে আবার জেরা শুরু করে পুলিশ। সূত্রের খবর, তখনই অস্ত্র কোথায় রয়েছে, জানান তিনি।

ঈশিতা খুনে অভিযুক্ত দেশরাজকে গ্রেফতারের পরে তাঁকে পুলিশি হেফাজতে পাঠায় আদালত। তাঁকে জেরা করে খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রের খোঁজ পেতে চেষ্টা করছিলেন তদন্তকারীরা। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার হল সেই অস্ত্র।

কী ভাবে অস্ত্র উদ্ধার হল? তদন্তকারীদের সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে দেশরাজকে নিয়ে যাওয়া হয় কৃষ্ণনগর স্টেশনে। স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্মের শেষ মাথায় পাঁচিল টপকে পাশের ডোবায় তল্লাশি চালানো হয়। সেখান থেকে উদ্ধার হল একটি সেভেন এমএম পিস্তল। ওই পিস্তলটি দিয়েই ঈশিতাকে খুন করা হয়েছিল বলে দাবি করেন দেশরাজ। পিস্তলটি উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় কোতোয়ালি থানায়।

কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার ডিএসপি শিল্পী পাল বলেন, ‘‘দেশরাজকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অস্ত্রের সন্ধান মিলেছে। তাঁর কথামতো তাঁকে কৃষ্ণনগর স্টেশনে নিয়ে যাওয়া হয়। কৃষ্ণনগর স্টেশনের এক নম্বর প্লাটফর্মের কাছে একটি জলা জায়গা থেকে অস্ত্রটি উদ্ধার হয়। সেটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।’’

কৃষ্ণনগরের তরুণী ঈশিতাকে ঘরে ঢুকে খুনের অভিযোগ ওঠে। ঈশিতাকে খুনের ঠিক পরের দিন, অর্থাৎ ২৬ অগস্ট বিকেলে অযোধ্যায় রামমন্দির থেকে শ’দুয়েক মিটার দূরে একটি হোটেলে যান দেশরাজ। পুলিশ সূত্রে খবর, ১ সেপ্টেম্বর উত্তরপ্রদেশ-নেপাল সীমান্তবর্তী একটি এলাকা থেকে তাঁকে পাকড়াও করা হয়। ট্রানজিট রিমান্ডে দেশরাজকে কৃষ্ণনগরের কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তার আগে গুজরাতের জামনগরে গ্রেফতার হয়েছিলেন দেশরাজ সিংহের মামা কুলদীপ সিংহ। পরে দেশরাজের বাবাকেও গ্রেফতার করা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.