নিছক সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ)-এর বিরোধিতা নয়। ২০২০ সালে দিল্লিতে পরিকল্পনা মাফিক সাম্প্রদায়িক হিংসা ছড়ানো হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ক্ষমতার পালাবদল ঘটানো। দিল্লি হিংসায় অভিযুক্ত উমর খালিদ এবং শারজিল ইমামদের জামিনের আর্জির বিরোধিতা করে বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্টে এই ‘তথ্য’ দিল দিল্লি পুলিশ।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মন্ত্রক পরিচালিত দিল্লি পুলিশ শীর্ষ আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় দাবি করেছে, বিভিন্ন তথ্য-প্রমাণ খতিয়ে দেখে বোঝা গিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভারত সফরের সময় দেশের রাজধানীতে হিংসা ছড়ানোর ‘পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র’ করেছিলেন ধৃত অভিযুক্তেরা। উদ্দেশ্য ছিল— আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দৃষ্টি আকর্ষণ করা এবং সিএএ-সংশ্লিষ্ট অশান্তিকে ‘মুসলিমদের গণহত্যা’ হিসাবে চিহ্নিত করা। জামিনের বিরোধিতা করে দিল্লি পুলিশ অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিচারব্যবস্থার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা এবং ইচ্ছাকৃত ভাবে বিচারপর্ব বিলম্বিত করার অভিযোগও এনেছে।
২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির শেষপর্বে দিল্লিতে সিএএ বিরোধী বিক্ষোভ চলাকালীন গোষ্ঠীহিংসার ঘটনা ঘটেছিল। তাতে ৫৩ জন নিহত হয়েছিলেন। আহত হয়েছিলেন ৭০০-র বেশি। ছাত্রনেতা উমর, শারজিল ছাড়াও ওই মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন মিরান হায়দার, গুলফিশা ফাতিমা এবং শিফা উর রহমান। দিল্লি হাই কোর্ট গত ২ সেপ্টেম্বর জামিনের আর্জি নাকচ করার পরে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে জেলবন্দি অভিযুক্তেরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বিচারপতি অরবিন্দ কুমার এবং বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়ার বেঞ্চে যায় জামিনের আবেদন।
গত ২২ সেপ্টেম্বর দিল্লি পুলিশকে নোটিস পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু এক মাসের বেশি সময় কেটে গেলেও এখনও এ বিষয়ে জবাব দাখিল না করায় দিল্লি পুলিশকে গত ২৭ অক্টোবর ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। দিল্লি পুলিশ এর আগে হাই কোর্টে দাবি করেছিল, হিংসার ঘটনায় ‘অন্যতম মূল ষড়যন্ত্রকারী’ উমর। শারজিলের বিরুদ্ধে হিংসাপর্বের সময় দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া এবং উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটিতে বিদ্বেষমূলক বক্তৃতার অভিযোগ রয়েছে। এ বার শীর্ষ আদালতকে তারা জানাল, ‘কেন্দ্রীয় সরকারের পতন ঘটানোর উদ্দেশ্যে ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব’।

