ইরানের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে পারে আমেরিকা! বুধবার এমনটাই জানালেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি জানান, আগামী সপ্তাহেই ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসার পরিকল্পনা করছে তাঁর প্রশাসন। সামরিক জোট ‘নেটো’র সম্মেলনের জন্য বর্তমানে নেদারল্যান্ড্সের দ্য হেগ শহরে রয়েছেন তিনি। সেখানেই এই মন্তব্য করেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বলেন, “আমরা আগামী সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চলেছি। হয়ত একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে, আমি ঠিক বলতে পারছি না। আমার মতে, এই চুক্তি এতটাও আবশ্যিক নয়। মানে, ওরা যুদ্ধ করছিল, লড়ছিল, এখন তারা আবার নিজেদের জগতে ফিরে যাচ্ছে। ফলে কোনও চুক্তি হোক বা না হোক, আমার কিছু যায় আসে না।” যদিও বৈঠকের বিষয়ে ইরানের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও মন্তব্য প্রকাশ্যে আসেনি।
বস্তুত, আমেরিকার সঙ্গে আগে থেকেই পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছিল ইরানের। তবে গত ১৩ ইরানের পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে ইজ়রায়েল হামলা চালানোর পরে ওই আলোচনা ভেস্তে যায়। ১৫ জুন ওমানে ওই বৈঠকের কথা ছিল। তবে ইজ়রায়েলের হামলায় আমেরিকার সমর্থন রয়েছে বলে মনে করছিল তেহরান। সেই সন্দেহে কারণেই আমেরিকার সঙ্গে ষষ্ঠ দফার পরমাণু বৈঠক বাতিল করে দেয় তারা। ইরান জানিয়ে দেয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে আলোচনা ‘অর্থহীন’ বলে মনে করছে তারা।
এরই মধ্যে বুধবার সকালে পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ জানান, পরমাণু চুক্তি নিয়ে ফের আলোচনার টেবিলে ফিরতে পারে আমেরিকা এবং ইরান। স্টিভের কথায়, ‘‘আমেরিকা ও ইরানের মধ্যে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে।’’ আলোচনা সদর্থক হতে চলেছে বলেও ইঙ্গিত দেন তিনি। এ বার নেদারল্যান্ড্স থেকে ট্রাম্পও জানিয়ে দিলেন, আগামী সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসতে পারে তাঁর প্রশাসন। যদিও ট্রাম্পের দাবি, ইরানের সঙ্গে এই চুক্তি যে হতেই হবে, এমনটা মনে করেন না তিনি। কারণ তাঁর মতে, আমেরিকা ইতিমধ্যে ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলিকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
বস্তুত, আমেরিকার হামলায় ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলি কতটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তা এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। আমেরিকার গোয়েন্দাদের একটি গোপন প্রাথমিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, হামলার ফলে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি কয়েক মাস পিছিয়ে গিয়েছে মাত্র। যদিও ট্রাম্প এ যুক্তি মানতে চান না। তাঁর দাবি, ওই রিপোর্ট অসম্পূর্ণ। তিনি আরও জানান, আমেরিকার হামলার পরে ওই পরমাণুকেন্দ্রগুলির এমন অবস্থা হয়ে গিয়েছে যে সেগুলি পুনরায় তৈরি করা খুবই কঠিন। ঘটনাচক্রে বুধবারই সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজ়িরা’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ইমায়েল বাঘেই বলেছেন, ‘‘ইজ়রায়েল ও আমেরিকার লাগাতার হামলায় ইরানের পরমাণুকেন্দ্রগুলি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’’