নাগরিকত্ব আইন বদলের জন্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উদ্যোগে আবার বাদ সাধল আমেরিকার আদালত। এই নিয়ে তৃতীয় বার! সোমবার নিউ হ্যাম্পশায়ারের ফেডেরাল আদালত ট্রাম্পের উদ্যোগের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।
‘আমেরিকান সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়ন’-এর আবেদনে বলা হয়েছিল, জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব বাতিলের জন্য ট্রাম্পের নির্দেশনামায় সই আমেরিকার সংবিধান লঙ্ঘন করছে এবং সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক মূল্যবোধকে পাল্টে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। বিচারক ডিস্ট্রিক্ট বিচারক জোসেফ এন ল্যাপলান্ট জানিয়েছেন, আবেদনের আইনি গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ট্রাম্পের নির্দেশনামা কার্যকরের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশও দিয়েছেন বিচারক।
চলতি মাসের গোড়াতেই মেরিল্যান্ড ফেডারেল আদালত আইন বদলের উদ্যোগে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। বিচারক জর্জ ডেবোরা নির্দেশে বলেন, ‘‘সংবিধানের চতুর্দশ সংশোধনীর উদ্যোগ গ্রহণযোগ্য নয়।’’ তার আগে জানুয়ারির শেষপর্বে আগে ওয়াশিংটনের ফেবারেল আদালতও ট্রাম্পের নির্দেশনামা কার্যকরের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করেছিল।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ভোটে জয়ের পরেই ট্রাম্প সে দেশের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত ১৫৬ বছরের পুরনো আইন বদলানোর কথা ঘোষণা করেছিলেন। হোয়াইট হাউসের প্রবেশের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই প্রক্রিয়াও শুরু করে দিয়েছিলেন তিনি। গত ২১ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত এক সরকারি নির্দেশনামায় সই করেছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু তার পরেই বিষয়টি যায় আদালতে।
প্রসঙ্গত, আমেরিকার আইনে জন্মসূত্রের নাগরিকত্বকে বলা হয় ‘জুস সোলি’। এটি প্রকৃতপক্ষে একটি ল্যাটিন শব্দ। যার অর্থ হল ‘মাটির অধিকার’। যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বলা হয়েছে, সেখানে জন্ম নেওয়া প্রতিটা শিশুকে স্বাভাবিক ভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। শিশুটির মা-বাবা অন্য দেশের নাগরিক হলেও সে জন্মসূত্রে আমেরিকার নাগরিকত্ব পাবে। ১৮৬৮ সালে ১৪তম সংশোধনীতে এই জন্মসূত্রে নাগরিকত্বের বিষয়টিকে আমেরিকার সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। যদিও ১৮৫৭ সালে সে দেশের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছিল জন্মসূত্রে কেউ আমেরিকার নাগরিকত্ব দাবি করতে পারবেন না। ভোটের প্রচারে ট্রাম্প বারে বারেই দাবি করেছিলেন জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব দেওয়ার জন্যেই দেশে অভিবাসী সমস্যা বাড়ছে। অবৈধ অভিবাসীদের সন্তান আমেরিকায় জন্ম নিলেও যাতে নাগরিকত্ব না পায়, তা নিশ্চিত করতেই সক্রিয় হয়েছিলেন ট্রাম্প।