লোক আদালতে ট্রাফিক মামলার (Traffic Case) নিষ্পত্তি করে জরিমানা হিসাবে আদায় হল দু’কোটিরও বেশি টাকা। শনিবার আলিপুর ও ব্যাঙ্কশাল আদালতে বসে লোক আদালত। আদালত সূত্রের খবর, শুধু ব্যাঙ্কশাল আদালতে এনআই অ্যাক্টের মামলা, ট্রাফিক মামলা ও পেটি কেসের নিষ্পত্তিতে রাজ্য সরকারের তহবিলে এসেছে ৭২ কোটি টাকা।
লালবাজার জানিয়েছে, বহু বাইক ও গাড়ির মালিকই ট্রাফিক মামলার জরিমানার টাকা সহজে দিতে চান না। ফলে একেকটি গাড়ির বিরুদ্ধে বকেয়া মামলা বাড়তেই থাকে। বিশেষ করে কোনও গাড়ি দুর্ঘটনা ঘটানোর পর বোঝা যায় যে, সেটির বিরুদ্ধে কত মামলা বকেয়া রয়েছে। যে গাড়ি বা বাইক আরোহীর ট্রাফিক আইন ভেঙে গাড়ি চালানোর প্রবণতা রয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধেই জরিমানা জমতে থাকে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, জরিমানার টাকা না দেওয়ার প্রবণতা বেশি রয়েছে বাস ও মালবাহী গাড়ির মালিকদের। সেই ক্ষেত্রে ট্রাফিকের মামলা যাতে খুব তাড়াতাড়ি নিষ্পত্তি হয়, তার জন্য লোক আদালত বসানো হয়। ট্রাফিক পুলিশের কর্তারা দেখেছেন, অনেক বাস ও মালবাহী গাড়ির মালিকেরই প্রবণতা রয়েছে, জরিমানার পাহাড় জমে যাওয়ার পর সেগুলি লোক আদালতে নিয়ে আসার। গড়ে মূল জরিমানার এক তৃতীয়াংশ টাকা দিয়েই মামলার নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করেন গাড়ির মালিকরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ট্রাফিক মামলার নিষ্পত্তির জন্য শনিবার ব্যাঙ্কশাল আদালতে সাতটি বেঞ্চ বসে। এই আদালতে ১০ হাজার ৯২টি গাড়ি ও বাইকের মামলা নিষ্পত্তির জন্য আসে। মোট মামলার সংখ্যা ছিল ৪৬ হাজার ৮১০টি। মূল জরিমানার পরিমাণ ছিল ১ কোটি ৮০ লাখ ১৩ হাজার ৩৩০ টাকা। সেখানে লোক আদালতে মামলার শুনানির পর ট্রাফিক মামলা নিষ্পত্তি বাবদ আদায় হয়েছে ৬৭ লাখ ৭৮ হাজার ৬২৯ টাকা।
ট্রাফিক কর্তাদের দাবি, আলিপুরে লোক আদালতে জরিমানা আদায়ের পরিমাণও অনেক বেশি। শনিবার আলিপুরে ১৫ হাজার ৭৭টি গাড়ির বিরুদ্ধে হওয়া ৯২ হাজার ১৯২টি মামলার নিষ্পত্তি হয়। এই আদালতে মূল জরিমানার পরিমাণ ছিল ৩ কোটি ৫৫ লাখ ২৯ হাজার ৯৬৫ টাকা। লোক আদালতে নিষ্পত্তির পর আদায় হয়েছে ১ কোটি ৪১ লাখ ৭০ হাজার ৭৯০ টাকা। দুই আদালত মিলে ২৫ হাজার ১৬৯টি গাড়ি ও বাইকের বিরুদ্ধে হওয়া ১ লাখ ৩৯ হাজার ২টি মামলা নিষ্পত্তি বাবদ মোট ২ কোটি ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৪১৯ টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।