ট্রাম্পের নয়া ভিসানীতি বিপাকে ফেলবে মার্কিন সংস্থাগুলিকেও, বছরের শেষে গুনতে হবে ১৪০০ কোটি ডলার, বলছে রিপোর্ট

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নয়া ভিসানীতিতে বিপাকে পড়তে চলেছে মার্কিন সংস্থাগুলি। বছরের শেষে তাদের ১৪০০ কোটি ডলার গুনতে হবে। এমনটাই দাবি করা হল ব্রিটিশ সংবাদপত্র ‘ফিনান্সিয়াল টাইমস’-এর প্রতিবেদনে।

এইচ-১বি ভিসা সংক্রান্ত নিয়মে বিস্তর বদল এনেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। জানানো হয়েছে, এখন থেকে এইচ-১বি ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলির কাছ থেকে এক লক্ষ ডলার (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) নেওয়া হবে। ভারতীয় সময় অনুযায়ী রবিবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে কার্যকর হয়ে গিয়েছে নয়া নিয়ম। ট্রাম্পের এই নয়া নীতি ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যাঁদের ইতিমধ্যেই এইচ-১বি ভিসা রয়েছে, তাঁদের দেশে পুনঃপ্রবেশের ক্ষেত্রে কোনও টাকা দিতে হবে না। অর্থাৎ যে সব ভিসাধারী এই মুহূর্তে বাইরে রয়েছেন, ফের আমেরিকায় ঢুকতে কোনও টাকা দিতে হবে না তাঁদের। নিয়ম থাকবে আগের মতোই। তবে যাঁরা নতুন করে এইচ-১বি ভিসার জন্য আবেদন করবেন, তাঁদের জন্যই সংশ্লিষ্ট মার্কিন সংস্থা এক লক্ষ ডলার দেবে সরকারকে।

এইচ-১বি ভিসার বিরুদ্ধে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রধান অভিযোগ, এর জন্য মার্কিন নাগরিকেরা বঞ্চিত হচ্ছেন। বিদেশিদের কারণে চাকরি যাচ্ছে আমেরিকানদের। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, আমেরিকায় ২০০৩ সালে এইচ-১বি ভিসাধারী তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীর সংখ্যা ছিল ৩২ শতাংশ। এখন তা বেড়ে ৬৫ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে মার্কিন নাগরিকদের বেকারত্ব। এই সব পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখেই নয়া সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে ট্রাম্প প্রশাসন।

প্রতি বছর প্রচুর বিদেশি এইচ-১বি ভিসা নিয়ে আমেরিকার তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সংস্থায় কাজ করতে যান। শিল্পমহলের হিসাব, প্রায় ৫ লক্ষ ভারতীয় এই মুহূর্তে আমেরিকায় কর্মরত। আমেরিকা বছরে যত এইচ-১বি ভিসা দেয়, তার ৭০ শতাংশের বেশি ভারতীয়দের ঝুলিতে আসে। মার্কিন প্রশাসনই জানাচ্ছে, গত বছর সব মিলিয়ে ১ লক্ষ ৪১ হাজারের বেশি এইচ-১বি ভিসা দেওয়া হয়েছে। ব্রিটিশ সংবাদপত্রের রিপোর্টে দাবি, এই ধারাই যদি বজায় থাকে, তা হলে বছরের শেষে মার্কিন সংস্থাগুলিকে ১৪০০ কোটি ডলার গুনতে হবে।

আমেরিকার অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন ট্রাম্পের এই নির্দেশনামার বৈধতা নিয়ে। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের সিনিয়র আধিকারিক বলেছেন, ‘‘এইচ-১বি ভিসার উপর এক লক্ষ ডলার চাপানোর আইনত কোনও অধিকারই নেই ট্রাম্পের। প্রক্রিয়াকরণের খরচ তোলার জন্য কিছুটা দাম তিনি বাড়াতে পারেন মাত্র।’’ মার্কিন শিল্পমহলের একাংশের দাবি, নয়া ভিসানীতির বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই সুপ্রিম কোর্টে মামলা হবে। সেখানে নয়া নিয়মে স্থগিতাদেশ দিতে পারে শীর্ষ আদালত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.