পরমাণু চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে চেয়ে এ বার ইরানকে চিঠি দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার এক সাক্ষাৎকারে চিঠির বিষয়টি জানিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি ট্রাম্প এ-ও জানান, যদি আলোচনায় না বসে তবে ফল খুব খারাপ হবে!
‘ফক্স বিজ়নেস নেটওয়ার্ক’কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প জানান, তিনি আশা করেন ইরান আলোচনার টেবিলে বসবে। চিঠির কথা উল্লেখ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘আমি আশাবাদী ইরান আলোচনায় রাজি হবে। কারণ সেটা ওদের পক্ষে ভাল।’’ তবে ইরান যদি তাঁর প্রস্তাব মেনে আলোচনায় না বসে বিকল্প পথের কথা ভাবে, তা মোটেই ফল ভাল হবে না বলেও হুমকি দিয়েছেন ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘ইরান যদি বিকল্পের কথা ভাবে, তবে অবশ্যই আমরাও পদক্ষেপ করব। কখনই তাদের পারমাণবিক অস্ত্র রাখতে দিতে পারি না।’’
ইরান প্রশাসনের কাকে চিঠি দিয়েছেন ট্রাম্প, তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে মনে করা হচ্ছে সে দেশের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকেই চিঠি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। যদিও এ ব্যাপারে হোয়াইট হাউস এখনও পর্যন্ত কোনও তথ্য দেয়নি।
এই আবহেই রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই ইরানের পরমাণু কর্মসূচির পরিস্থিতি সমাধানের বিষয়ে সে দেশের প্রশাসনের সঙ্গে কথা হয়েছে। রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী সের্গেই রিয়াকভের সঙ্গে ইরানের রাষ্ট্রদূত কাজ়েম জালালির সঙ্গে আলোচনা করেছেন।
২০১৫ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জমানায় ইরানের সঙ্গে তিন বছরের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি করেছিল ছয় শক্তিধর রাষ্ট্র— ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া, জার্মানি, চিন এবং আমেরিকা। ‘জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন’ (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত ওই চুক্তিতে স্থির হয়, ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি বন্ধ রাখলে তেহরানের উপর বসানো বিপুল আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেবে রাষ্ট্রপুঞ্জ, আমেরিকা ও অন্যান্য বেশ কিছু দেশ। যদিও ২০১৮ সালের মে মাসে হোয়াইট হাউসের তরফে একটি টুইট করে বলা হয়, ‘‘আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার পরিপন্থী ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি। তাই এই চুক্তি ভেঙে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রাম্প।’’ এর পর জো বাইডেনের জমানায় ইরানের সঙ্গে নতুন করে পরমাণু সমঝোতার পথ খুলেছিল আমেরিকা। ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে সুর চড়াতে শুরু করেন। মাস খানেক আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানান, যদি ইরান তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে, তা হলে তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। তবে এ বার সেই ট্রাম্পকেই আলোচনার প্রস্তাব দিতে শোনা গেল।