রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি ভারত। নয়াদিল্লির এ হেন সিদ্ধান্তে খুশি নন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বার বার বলা সত্ত্বেও চিত্র না-পাল্টানোয় আবার এক বার ভারতের উপর ‘উল্লেখ্যযোগ্য’ শুল্ক বৃদ্ধির হুঁশিয়ারি দিলেন তিনি। জানান, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন!
ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দুই পক্ষের মধ্যে এখনও দর কষাকষি। তবে ভারতের সঙ্গে এই চুক্তি নিয়ে বার বার নিজের ইচ্ছার কথা প্রকাশ করেছেন ট্রাম্প। ভারতকে বন্ধু হিসাবে অভিহিত করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জানিয়েছেন, নয়াদিল্লির সঙ্গে ব্যবসার ব্যাপারে আশাবাদী তিনি। কিন্তু মঙ্গলবার তাঁর গলায় অন্য সুর শোনা গেল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় (ভারতীয় সময়) ট্রাম্প জানান, ভারত ভাল ব্যবসায়িক বন্ধু নয়। কেন তিনি এই কথা বলছেন তার ব্যাখ্যাও দেন ট্রাম্প।
সংবাদমাধ্যম ‘সিএনবিসি’-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘ভারত ভাল ব্যবসায়িক বন্ধু নয়। কারণ ওরা আমাদের সঙ্গে ব্যবসা করে। কিন্তু আমরা ওদের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারি না।’’ তার পরেই ভারতের উপর অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর কথা জানান ট্রাম্প। তাঁর কথায়, ‘‘আমি আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভারতের উপর আরও শুল্ক চাপাতে চলেছি।’’ তবে ভারতীয় পণ্যের উপর কত পরিমাণ অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করা হবে, তা নিয়ে স্পষ্ট করে কোনও ধারণা দেননি ট্রাম্প।
সোমবারও ভারতের উপর শুল্ক বৃদ্ধির কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। সমাজমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে পোস্ট করে ভারতকে সরাসরি হুমকি দিয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘ভারত যে শুধু রাশিয়ার থেকে বিপুল পরিমাণে তেল কিনছে, তা নয়। বরং মুনাফার জন্য তারা কেনা তেলের বেশির ভাগ অংশ খোলা বাজারে বিক্রিও করছে। এ দিকে রাশিয়ার যুদ্ধপ্রক্রিয়া ইউক্রেনের কত মানুষের প্রাণ কাড়ছে, তার পরোয়াও করছে না ভারত। এই কারণেই আমি ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক আরও বৃদ্ধি করব।’’ সেই হুঁশিয়ারির ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আবার নতুন করে ভারতের উপর শুল্ক চাপানোর হুমকি দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
প্রসঙ্গত, গত বুধবারই ভারতীয় পণ্যের উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। পাশাপাশি, রাশিয়ার কাছ থেকে তেল এবং অস্ত্র কেনার জন্য ভারতকে ‘জরিমানা’ও দিতে হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি। তার পরে সুর চড়িয়ে সোমবার ভারতকে শুল্ক-হুমকি দেন ট্রাম্প। তবে তাঁর হুঁশিয়ারির কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছে নয়াদিল্লি। সোমবার রাতেই ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়, রাশিয়ার থেকে তেল কেনা নিয়ে নয়াদিল্লিকে বার বার উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে নিশানা করছে আমেরিকা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এটি শুধু অন্যায্যই নয়, অযৌক্তিকও।