কানাডা, মেক্সিকোর মতো পড়শিদের কি আরও বিপাকে ফেলে দিলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প? অ্যালুমিনিয়াম এবং ইস্পাতজাত পণ্যের উপর নতুন করে কর চাপালেন তিনি। ওই পণ্য এ বার থেকে বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক নিয়ে আমদানি করবে আমেরিকা। ট্রাম্প জানিয়েছেন, এই নতুন শুল্কের বিষয়ে সোমবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করবে হোয়াইট হাউস। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, কানাডা হল আমেরিকার ইস্পাত আমদানির সবচেয়ে বড় উৎস। অ্যালুমিনিয়ামের ক্ষেত্রেও হিসাবটা অনেকটা তেমন। উভয় ক্ষেত্রেই তালিকায় দ্বিতীয় মেক্সিকো।
দ্বিতীয় বার আমেরিকার প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসার পর থেকেই একে একে শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছেন ট্রাম্প। কানাডা এবং মেক্সিকো আমেরিকার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক সঙ্গী। দুই দেশের উপরেই ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। পাল্টা পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পড়শিরাও। পরে ওই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু অ্যালুমিনিয়াম এবং ইস্পাতের উপর শুল্ক চাপিয়ে পরোক্ষে দুই পড়শিকেই বিপদে ফেলতে চাইলেন ট্রাম্প, মনে করছেন অনেকে।
রবিবার (স্থানীয় সময়) নিউ অরল্যান্সে যাওয়ার পথে বিমানে কিছু সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প জানান, আমেরিকায় সমস্ত ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম পণ্যের আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক নেওয়া হবে। সোমবার হোয়াইট হাউস থেকে এই ঘোষণা করা হবে। এমনিতে এই সমস্ত ধাতুগুলির আমদানিতে কিছু শুল্ক আগে থেকেই ছিল। তার উপরে বাড়তি ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপিত হবে। চলতি সপ্তাহে আরও কিছু শুল্ক আরোপের কথা ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর বক্তব্য, যে সমস্ত দেশ আমেরিকার থেকে চড়া হারে শুল্ক নেবে, তাদের উপরে আমেরিকাও শুল্ক চাপাবে। বাণিজ্যনীতিতে এ ভাবে ‘সমতা’ আনতে চান ট্রাম্প।
পরিসংখ্যান বলছে, ২০২৩ সালে ইস্পাত এবং অ্যালুমিনিয়াম আমেরিকা সবচেয়ে বেশি আমদানি করেছিল কানাডা থেকে। দ্বিতীয় স্থানে ছিল মেক্সিকো। এ ছাড়াও এই পণ্য আমদানি করা হয় ব্রাজ়িল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ভিয়েতনামের থেকে।
গত সপ্তাহে কানাডা এবং মেক্সিকোর উপর শুল্ক আরোপ করে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ওই দুই দেশ থেকে অবৈধ ভাবে প্রচুর মানুষ আমেরিকায় ঢুকে পড়েন। তারা সীমান্ত সুরক্ষিত না-করলে এবং অবৈধ অভিবাসীদের না-আটকালে শুল্ক জারি থাকবে। কানাডাও পাল্টা ২৫ শতাংশ শুল্ক আমেরিকার উপর চাপানোর কথা ঘোষণা করে। কর চাপানোর হুঁশিয়ারি দেয় মেক্সিকোও। পরে বিতর্কের মাঝে হোয়াইট হাউস জানায়, আপাতত কানাডা-মেক্সিকোর কাছ থেকে বাড়তি শুল্ক নেওয়া হচ্ছে না। সীমান্তের বিষয়ে অবশ্য দুই দেশই আমেরিকাকে আশ্বস্ত করেছে।