প্রত্যন্ত অস্ট্রেলিয়ায় বইবে ঝড়। গরম পড়তে না পড়তেই ঝড়ের পর ঝড় অস্ট্রেলিয়ায়। ভারত মহাসাগরের বুকে তৈরি হচ্ছে আবার এক ঝড় বলে মিলল পূর্বাভাস। আবহাওয়া অফিস থেকে জানিয়ে দিয়েছে, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এটি বড় আকার ধারণ করতে পারে। কোকজ দ্বীপের দক্ষিণে ঝড়টিকে ট্র্যাক করা গিয়েছে। এটি পারথ থেকে অন্তত ২৭৫০ কিমি উত্তর-পশ্চিমে। সেই হিসেবে আশা করা হচ্ছে, এই ঝড় থেকে মেইনল্যান্ড অস্ট্রেোলিয়ার কোনও ক্ষতি হবে না। যেহেতু এটি তৈরি হচ্ছে উপকূল থেকে বহু বহু দূরে।
এর আগেও অস্ট্রেলিয়ায় রেয়ার ট্রপিক্যাল সাইক্লোনের খবর মিলেছে। সেটি ছিল সাইক্লোন আলফ্রেড। সঙ্গে ছিল বিপুল হাওয়া ও বৃষ্টি। দেশের পূর্বদিকে এই ঝড়ের আতঙ্কে কাঁপছিলেন বহু মানুষ। স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। গণপরিবহণও বন্ধ ছিল। বিদ্যুৎসংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। ৪৫০০টি ঘর অন্ধকারে ডুবে গিয়েছিল। এত বেগে হাওয়া বইছিল যাতে আশঙ্কা ছিল ঢেউ উঠতে পারে অন্তত ৪০ ফুটের মতো!
সাইক্লোনটি কুইন্সল্যান্ড অতিক্রম করেছিল। তারপর ধীরে ধীরে তা বৃহত্তর তীরভূমির দিকে এগোচ্ছিল। গতিশীল বাতাসের প্রভাব ছিল অত্যন্ত বেশি। ১৯৭৪ সালে ব্রিসবেনে আছড়ে পড়েছিল সাইক্লোন জো। তার পরে এখানে আর এমন ঝড় আসেনি। এই ঝড় গোল্ড কোস্টে আছড়ে পড়লে হবে বিপুল বন্যাও। এ অঞ্চলের বেশির ভাগ ঝড়ই আছড়ে পড়ে কুইন্সল্যান্ডে। যেখানে ঝড় আছড়ে পড়তে পারে, মনে করা হচ্ছে, সেখানে অন্তত ৪০ লক্ষ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে অন্তত ২০ হাজার বাড়ি পড়তে পারে বন্যার কবলে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবানেজ বলেছিলেন, বিশ্রী আবহাওয়ার জেরে সাউদার্ন কুইন্সল্যান্ডের ৬৬০টি স্কুল এবং নর্দার্ন নিউ সাউথ ওয়েলসের ২৮০টি স্কুল বন্ধ রাখা হয়েছে। গণপরিবহণেও রাশ টানা হয়েছে। হাসপাতালে শুধু ইমার্জেন্সি বিভাগই চালু।
এর আগে ‘অ্যান্টনি’, না, ‘আলফ্রেড’ কী হবে ঝড়ের নাম, তা নিয়ে আলোচনা চলছিল। জানা গিয়েছিল এ-অঞ্চলে ধেয়ে আসছিল দু’টি ট্রপিক্যাল সাইক্লোন। যে দুটি তৈরি হচ্ছিল ভারত মহাসাগরের বুকেই। বলা হচ্ছিল, ২০০৭ সালের পরে এত শক্তিশালী ঝড় আর আসেনি এখানে! জেলিয়া নামক ঝড়টিকে নিয়ে খুব হইচই হচ্ছিল। তবে তা মোটামুটি অতীত। জানা হয়ে গিয়েছে, ওই ঝড় আর উপকূলে কোনও তরঙ্গ তুলতে পারবে না! পুরনো ঝড়ের প্যারাডাইম শিফট্ ঘটে গিয়েছে। তবে তখনই অস্ট্রেলিয়ার পরবর্তী ঝড়ের নাম কোনটি হবে, সেটিই ছিল মূল আলোচ্য। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর নাম অ্যান্টনি আলবানেজ। জানা গিয়েছিল, তিনি চান না, তাঁর নামের অনুষঙ্গে কোনও ঝড়ের নাম হোক। তাই তিনি ‘অ্যান্টনি’ নামটিকে পেরিয়ে ওই তালিকার পরের নাম, ‘আলফ্রেডে’র দিকে নজর দিতে বলেছিলেন।