এ বার রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে রাজভবনের সেই মহিলা কর্মী

রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের বিরুদ্ধে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন ‘শ্লীলতাহানি’র অভিযোগ তোলা রাজভবনের সেই কর্মী। সূত্রের খবর, রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শীর্ষ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করেছেন ‘নির্যাতিতা’। এখন দেখার শীর্ষ আদালত রাজ্যপালের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে কি না।

ঘটনাচক্রে, মঙ্গলবারই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন রাজ্যপাল বোস। তার পরেই এ বার বোসের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হল।

গত ২ মে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে রাজভবনের অস্থায়ী এক মহিলা কর্মী যৌন হেনস্থার অভিযোগ এনেছিলেন। কিন্তু সাংবিধানিক রক্ষাকবচ থাকায় রাজ্যপালের বিরুদ্ধে এই ধরনের অভিযোগে তদন্ত করা যায় না বলে কোনও অভিযোগ দায়ের করেনি কলকাতা পুলিশ। খাতায় কলমে অভিযোগ দায়ের না হলেও মহিলার বয়ানের ভিত্তিতে অনুসন্ধান চালিয়ে গিয়েছিল কলকাতা পুলিশ। ডিসি (সেন্ট্রাল) বিষয়টি নিয়ে সক্রিয় হন বলেও লালবাজার সূত্রে জানা যায়। পুলিশ উদ্যোগী হয়ে রাজভবনের সিসি ক্যামেরার কিছু ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযোগকারিণীর বয়ানের সঙ্গে মিলিয়ে দেখার চেষ্টাও করছিল। সেই সঙ্গে মহিলাকে পুলিশের কাছে যেতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে রাজভবনের কয়েক জন আধিকারিকের নামে মামলাও রুজু করেছিল পুলিশ। কিন্তু কলকাতা হাই কোর্টের স্থগিতাদেশে সেই তদন্ত বন্ধ হয়ে যায়।

রাজ্যপাল বোসের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ ওঠার পর হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। যদিও প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চ সেই মামলা শুনতে চায়নি। আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, এই বিষয়টিতে কোনও ভাবেই হস্তক্ষেপ করবে না তারা।

প্রসঙ্গত, রাজভবনের মহিলা কর্মী রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলার পর রাজভবন ও নবান্নের ‘তিক্ততা’ চরমে ওঠে। রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল অবশ্য প্রথম থেকেই সব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। কিন্তু বিতর্ক জারি থেকেছে। সম্প্রতি দুই নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথ নিয়ে টানাপড়েনের আবহেও রাজ্যপালের বিরুদ্ধে ওঠা শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রসঙ্গ উঠে এসেছে। মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘রাজভবনে যা কীর্তি-কেলেঙ্কারি চলছে, তাতে মেয়েরা যেতে ভয় পাচ্ছে বলে আমার কাছে অভিযোগ করেছে।’’ এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী মমতার বিরুদ্ধে কলকাতা হাই কোর্টে মানহানির মামলা করেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবার শিলিগুড়ি সফরে গিয়ে নিজেই সে কথা জানিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘কেউ যদি আমার সম্মান নষ্ট করার চেষ্টা করেন, তবে তিনি যিনিই হোন, তাঁকে ভুগতে হবে।’’ পরে রাজ্যপালকে এ ব্যাপারে বিশদে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী আমার সাংবিধানিক সাথী। আমি সেই হিসাবেই তাঁকে মর্যাদা দিই। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা নিয়ে মানহানির মামলা দায়ের হয়েছে। বাকিটা আদালত বিচার করবে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.