মায়ানমার, তাইল্যান্ডের পর এ বার ভূমিকম্পে কাঁপল প্রশান্ত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র টোঙ্গা। সে দেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী রবিবার সন্ধ্যায় ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে মাটি। ভারতীয় সময় অনুযায়ী ঘড়ির কাঁটা তখন ৫টা ৫০ মিনিট ছুঁয়েছে। আমেরিকার জিয়োলজিক্যাল সার্ভে (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.১। তবে ওই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির কোনও হিসাব পাওয়া যায়নি।
দ্বীপরাষ্ট্র টোঙ্গায় রবিবারের ভূমিকম্পের উৎসস্থল ছিল পাঙ্গাই গ্রামের ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণপূর্বে মাটি থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে। ভূমিকম্পের অব্যবহিত পরেই জারি করা হয়েছে সুনামির সতর্কতাও। নিউয়ে এবং টোঙ্গার উপকূলে ০.৩ থেকে ১ মিটার পর্যন্ত উঁচু ঢেউ ধেয়ে আসতে পারে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় সুনামি সতর্কতা কেন্দ্রও জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎসস্থল থেকে ৩০০ কিলোমিটার এলাকা পর্যন্ত সমুদ্র উত্তাল থাকবে। বিপজ্জনক উচ্চতার ঢেউ আসারও সম্ভাবনা রয়েছে।
দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় ১৭০টিরও বেশি দ্বীপের সমষ্টি নিয়ে তৈরি টোঙ্গা। সেখানে লাখখানেক মানুষের বাস। নির্মল সমুদ্রসৈকতের জন্য বিখ্যাত এই দ্বীপপুঞ্জ পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় গন্তব্যস্থল। তবে এই দ্বীপগুলি প্রশান্ত মহাসাগরের ‘আগ্নেয়বলয়’ (রিং অফ ফায়ার)-এর মধ্যে পড়ে। তাই ভৌগোলিক অবস্থানের কারণেই টোঙ্গার মতো দ্বীপরাষ্ট্রগুলি ভূমিকম্পপ্রবণ।
উল্লেখ্য, গত কয়েক দিন ধরেই ধারাবাহিক ভাবে ভূমিকম্প হচ্ছে প্রাচ্যের নানা দেশে। শুক্রবার সকাল থেকে পর পর ১৫ বার কেঁপেছে মায়ানমারের মাটি। কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৭। ওই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ১৬০০ ছাড়িয়ে গিয়েছে। ভূমিকম্পে তছনছ হয়ে গিয়েছে বিস্তীর্ণ এলাকা। আহত হয়েছেন প্রায় সাড়ে তিন হাজার মানুষ। ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছে পার্শ্ববর্তী দেশ তাইল্যান্ডেও। তাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাঙ্ককে একটি নির্মীয়মাণ ৩০ তলা ভবন ভেঙে পড়ে শুক্রবার। এখনও পর্যন্ত সেখানে ১৭ জনের মৃত্যুর কথা জানা গিয়েছে। আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে ৪২ জনকে। এখনও অন্তত ৭৮ জনের কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। উদ্ধারকারীদের অনুমান, অনেকে ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে রয়েছেন। তাঁদের খুঁজে বার করার মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে উদ্ধারকারী দল।