যোগাসন শুধু শরীরচর্চা নয়, এটি এক গভীর আত্মিক অনুভূতি। যোগ মানে হল শরীর, মন ও আত্মার সমন্বয় সাধন করা—যার মাধ্যমে মানুষ নিজের ভেতরের শান্তি, ভারসাম্য ও শক্তির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারে। প্রাচীন ভারতীয় সভ্যতায় এর উৎপত্তি হলেও আজ বিশ্বজুড়ে যোগ ব্যায়াম সুস্বাস্থ্য, মানসিক প্রশান্তি ও আত্ম-উন্নয়নের একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নিয়মিত যোগাভ্যাস শরীরকে সুগঠিত করে, মনকে প্রশমিত করে এবং জীবনকে করে আরও সচেতন ও অর্থবহ।

প্রতিবছরেই ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ উপলক্ষে সারা বিশ্ব জুড়েই চলতে থাকে নানা ধরনের স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক অনুষ্ঠান। তাই এই বছর পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে অন্যতম ‘নারায়ণা স্কুলস্’ যোগাসনকে কেন্দ্র করে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে। তারা শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের শিক্ষাজীবনে নিয়মিতভাবে যোগাভ্যাসকে অন্তর্ভুক্ত করে শিক্ষাক্ষেত্রে এক উজ্জ্বল ও অভিনব পরিবর্তনের পথ দেখাচ্ছে।

যোগব্যায়াম শুধু শরীরকে সুস্থ রাখে তা-ই না, মনকে শান্ত করে, মনোযোগ বৃদ্ধি করে এবং আত্মসচেতনতাকেও জাগ্রত করে—এই বিশ্বাসকে ভিত্তি করেই ‘নারায়ণা স্কুলস্’ তাদের শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণরূপে একটি যোগা কর্মসূচি চালু করেছে। বর্তমান যুগের পড়ুয়ারা নানা ধরনের মানসিক চাপ, ডিজিটাল আসক্তি এবং কঠিন প্রতিযোগিতার মধ্যে দিয়ে যায়—এই সব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় যোগা একটি কার্যকরী হাতিয়ার হিসেবে বারবারই প্রমাণিত হয়েছে।

‘নারায়ণা স্কুল’-এর অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলীরা বলেছেন, “নিয়মিত যোগাভ্যাসের ফলে শিক্ষার্থীদের মনোসংযোগ, পরীক্ষার সময় মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং সহপাঠীদের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি দেখা গেছে। শিশুরা ধীরে ধীরে আরও সচেতন, ধৈর্যশীল এবং সহানুভূতিশীল হয়ে উঠছে।”
‘নারায়ণা স্কুলস্’-এর পশ্চিমবঙ্গের একাডেমিক প্রধান প্রিয়াঙ্কা মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, “আমাদের স্কুলে যোগা শুধুই শারীরিক ব্যায়াম নয়, এটি আমাদের শিক্ষাদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আমরা প্রথাগত যোগাভ্যাসকে আধুনিক শিক্ষাপদ্ধতির সঙ্গে মিলিয়ে এমন এক পরিবেশ তৈরি করেছি, যেখানে পড়াশোনা এবং মানসিক সুস্থতা একসঙ্গে এগোতে থাকে।”
তিনি আরও বলেছেন, “যখন শিশুরা প্রতিদিন যোগা করে, তখন তাদের মনোযোগ বৃদ্ধি পায়, আত্মবিশ্বাস গড়ে ওঠে এবং জীবনের নানা সমস্যা মোকাবিলার জন্যও তারা শক্তি পায়। এই অভ্যাস তাদের শুধু শ্রেণীকক্ষেই নয়, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমানভাবে সাহায্য করছে।”

এই বিশেষ কর্মসূচির মাধ্যমে ‘নারায়ণা স্কুলস্’ শুধু যোগাসন বা শরীরচর্চা নয়, বরং শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম, ধ্যান ও মননশীলতার চর্চাও শেখায়। এ জন্য অভিজ্ঞ ও পারদর্শী শিক্ষকমন্ডলীও নিয়োগ করা হয়েছে, যারা যোগব্যায়াম এবং শিশু মনস্তত্ত্ব—উভয়ক্ষেত্রেই দক্ষ।
আজ বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদ্যাপনের সময়ে, ‘নারায়ণা স্কুলস্’ নিজেকে প্রমাণ করছে এক নতুন শিক্ষার পথপ্রদর্শক হিসেবে। প্রাচীন যোগবিদ্যার আলোকে এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে এক আধুনিক, সুস্থ ও সচেতন প্রজন্ম—যেখানে পাঠ্য সফলতার সঙ্গে সঙ্গে মানসিক শান্তিও সমান গুরুত্ব পাচ্ছে।
‘নারায়ণা স্কুলস্’-এর এই দৃষ্টান্তমূলক প্রয়াস ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের অন্যান্য স্কুলগুলিকেও অনুপ্রাণিত করছে। পাশাপাশি এই প্রতিষ্ঠান সামগ্রিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও এক উজ্জ্বল উদাহরণ স্থাপন করছে।