এই সরকারের যাত্রাটা হচ্ছে “চলো চলো তিহার” সিমলাপালের প্রতিবাদ সভায় তৃণমূলের কড়া সমালোচনায় শুভেন্দু অধিকারী

তৃণমূল সরকারের যাত্রাটা হলো “চলো চলো তিহার”। আজ বাঁকুড়ার সিমলাপাল রাজবাড়ি ময়দানে বিজেপির প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এভাবেই সমালোচনা করেন তিনি। এই প্রতিবাদ সভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ছাড়াও বাঁকুড়ার সাংসদ ডাক্তার সুভাষ সরকার, সাংসদ লকেট চ্যাটার্জি, বাঁকুড়া সাংগঠনিক বিজেপির সভাপতি সুনীল রুদ্র মন্ডল, বাঁকুড়ার বিজেপি বিধায়ক নীলাদ্রি শেখর দানা সহ রাজ্য ও জেলা স্তরের বহু নেতা-নেত্রী উপস্থিত ছিলেন।

এই প্রতিবাদ সভার শুরুতেই বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ও পিসিমণি সিমলাপালের সভাটা হলো তো? তিনি বলেন, এই সিমলাপালে সভা করার জন্য পুলিশের কাছে অনুমতি চেয়েছিলাম এখানে একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি করার জন্য। আপনারা শুনলে আশ্চর্য হয়ে যাবেন, পশ্চিমবাংলার পুলিশকে মমতা পুলিশে পরিণত করেছেন পিসি ভাইপো। আমরা হাইকোর্ট থেকে অনুমতি নিয়ে এই সভা করার অনুমতি পেয়েছি।
এই সভাকে আটকানো হয়েছিল কেন জানেন? কারণ কয়লা ভাইপো আগামীকাল আপনাদের জেলায় প্রবেশ করছেন। সমস্ত জেলাগুলোতে অত্যাচার অত্যাচার আর অত্যাচার।

এখানে সারেঙ্গার মায়েরা নলকূপ থেকে জল নেবার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আমি তৃণমূল কংগ্রেসে ছিলাম, ২০১৬ সাল পর্যন্ত এই জেলাতে আমি কাজ করেছি। তারপরে পিসি এবং ভাইপো আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সরিয়েছে কেন? এখানে এত বালির ভাগ আছে, কয়লার ভাগ আছে, তাই ভাইপোকে দেওয়া হয়েছিল বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ার দায়িত্ব বলে তিনি জানান। এরা ২০১৮ সালে পঞ্চায়েতে নমিনেশন পর্যন্ত করতে দেয়নি।

এই সরকারের চাকরি দুর্নীতি নিয়েও তিনি কথা বলেন। কিভাবে বাঁকুড়া জেলা থেকে কালেক্টর নিয়োগ করে টাকা নেওয়া হয়েছে আপনারা নিশ্চয়ই জানেন। কিভাবে লুট করা হয়েছে সেই টাকা আপনারা তাও জানেন।এই সরকারের যাত্রাটা হচ্ছে চলো চলো তিহারের যাত্রা। এ প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে তিনি কেষ্ট মন্ডলের কথা তুলে ধরেন। এখানকার চোরেদেরও এই দশা হবে বলে তিনি সবাইকে আশ্বস্ত করেন।

একটা চোরকেও নরেন্দ্র মোদীজি ছাড়বেন না বলে তিনি জানান। নরেন্দ্র মোদী জীবনে ছিলেন, “না খাওঙ্গা না খানে দুঙ্গা”। তাই ভারতীয় জনতা পার্টি সেই জায়গায় অটল আছে। তিনি মোদীর প্রশংসা করতে যেয়ে বলেন, মোদীজি না থাকলে আফগানিস্তান হয়ে যাবে ভারতবর্ষ। আমাদের দেশ ইউক্রেন হয়ে যাবে বলে তিনি জানান। তাই আগলি বার, মোদীজি চারশো পার। লোকসভার কথা পরে হবে, সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। পঞ্চায়েত ভোটে পরিবর্তন করতে হবে। রাজ্য সরকার বলছে, ১০০ দিনের টাকা নাকি পাওয়া যাচ্ছে না? কেন পাওয়া যাবে? আপনারা জব কার্ড হোল্ডাররা বলুন, কেন্দ্র সরকার অনেক প্রকল্পেই টাকা দিয়েছে। তারা সেসব লুট করেছে।

আগে জব কার্ড হোল্ডার ছিল ৩ কোটি ৬০ লক্ষ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। এখন সেটা দাঁড়িয়েছে জব কার্ড হোল্ডার দু’কোটি ষাট লক্ষ। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় মোদীজি বাড়ি দিয়েছেন। আপনারা বাড়ি পাননি কারণ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের গোয়াল ঘরে বাড়ি ঢুকে গেছে। এদের নেতারা শৌচালয় দেখিয়ে বাড়ি নিয়ে নিয়েছে। এরা টাকা লুট করেছে বলে তিনি জানান। এরপরেও যারা বাড়ি পেয়েছেন তাদের আবার কাটমানিও দিতে হয়েছে। তাই এই চোরেদের পঞ্চায়েত থেকে তাড়াতে হবে। এদেরকে তাড়ানোর দায়িত্বটা আমাদের আপনাদের নয়।

এবারের পঞ্চায়েতের নির্বাচনে নমিনেশন করানোর দায়িত্বটা আমাদের নেতাদের এবং এমএলএ’দের। তাদের কাছে সিআইএসএফের জওয়ানরা আছে। এই চোর এদেরকে আপনারা তাড়াবেন তো? এরপরে তিনি চোর ধরো স্লোগান দেন। তৃণমূল মানে কি? উপস্থিত জনতা চোর বলে ডাকে। আমরা আদিবাসী মহিলাকে রাষ্ট্রপতি করেছি, কিন্তু আপনারা আদিবাসীদের সম্মান দেননি। কুড়মি সমাজের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, কুড়মি বাউরিদের অবদান আমরা অস্বীকার করতে পারবো না। এরা আমাদের দুহাত ভরে ভোট দিয়েছেন। সমস্যা তৈরি করেছেন মমতা ব্যানার্জি। পশ্চিমবাংলায় চারিদিকে বোমা বিস্ফোরণ, এগরাতে কত মানুষকে বোমা দিয়ে উড়িয়ে মারল, গোটা বাংলা জ্বলছে, লড়াই চলছে লড়াই চলবে বলে তিনি জানান। কম্পার্টমেন্টাল চিফ মিনিস্টার হয়েছে হ্যাঁ কি না? এবারে কি করতে হবে? প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী করতে হবে। এরপর রাষ্ট্রবাদী সরকার গঠন করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.