এখনই যুদ্ধ থামানোর প্রশ্ন নেই! ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিবৈঠকের পরদিনই ঘোষণা করে দিল ড্রোনে ‘আহত’ রাশিয়া

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এখনই থামছে না! যুদ্ধ অবসানের জন্য সমঝোতায় পৌঁছোনো সহজ নয় বলেই মনে করছে রুশ প্রশাসনের সদর দফতর ক্রেমলিন। তাদের মতে, দুই দেশের মধ্যে কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসন্ন, তা আশা করাই ভুল!

সোমবারই তুরস্কের ইস্তানবুলে শান্তি বৈঠকে বসেছিল ইউক্রেন এবং রাশিয়ার প্রতিনিধিদল। বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্তে একমত হলেও যুদ্ধবিরতি যে এখনই হচ্ছে না, তা এক ঘণ্টার বৈঠকের নির্যাস থেকেই স্পষ্ট। রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই দেশই একে অপরের কাছে ‘স্মারকলিপি’ দিয়েছে। সংঘর্ষ থামাতে বৈঠকের আগেই বেশ কিছু শর্ত মস্কোর কাছে রেখেছিল ইউক্রেন। রাশিয়া অবশ্য বৈঠকের সময় তাদের শর্তগুলি জানায়। ইউক্রেনের প্রতিনিধিরা জানান, তারা সেই শর্তগুলি খতিয়ে দেখে এক সপ্তাহ পর সিদ্ধান্ত জানাবেন। মঙ্গলবার ক্রেমলিন জানায়, ইউক্রেন যদি রাশিয়ার ভূখণ্ড ছেড়ে দেয় এবং তাদের সেনার সংখ্যা কমায় তবেই যুদ্ধ থামানোর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা করতে পারে মস্কো। যদিও ইউক্রেন সেই প্রস্তাবে এখনও রাজি নয়। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানান, ইস্তানবুলের আলোচনা পর যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তাকে সম্মান জানাবে রাশিয়া।

উল্লেখ্য, ইস্তানবুলের বৈঠকে রাশিয়া এবং ইউক্রেন দুই দেশই বন্দি বিনিময়ে সম্মত হয়। ২৫ বছরের কম বয়সি সমস্ত গুরুতর অসুস্থদের ছাড়া হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ১২০০০ সেনার মৃতদেহও বিনিময় করবে ইউক্রেন এবং রাশিয়া! ক্রেমলিন জানিয়েছে, দুই দেশের মধ্যে সমস্যা সমাধানের সম্ভাব্য বিষয়গুলি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছোনোর ব্যাপারে কাজ চালিয়ে যাবে।

২০২২ সাল থেকে রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। কখনও রাশিয়ার ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করেছে ইউক্রেনের একের পর এক শহর। তেমন পাল্টা হামলাও চালিয়েছে ইউক্রেন সেনা। কী ভাবে দুই দেশের মধ্যে শান্তি ফেরানো যায়, যুদ্ধবিরতি সম্ভব হয়— তা নিয়ে বিভিন্ন দেশ উদ্যোগী হয়। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও বার বার যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানান। দুই দেশের রাষ্ট্রপতিদের সঙ্গেও আলাদা আলাদা করে কথা বলেন। তবে সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে এখনই ট্রাম্পের সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বৈঠকের কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই জানাল ক্রেমলিন।

রবিবারই রাশিয়ার ভূখণ্ডে ইউক্রেন বড়সড় ড্রোন হামলা চালায়। রাশিয়ার ভিতরে ড্রোন পাঠিয়ে সে দেশের পাঁচটি বিমানঘাঁটিতে দাঁড়িয়ে থাকা ৪১টি বোমারু বিমানকে ধ্বংস করেছে ইউক্রেন। অতর্কিতে ইউক্রেনের এই হামলা সাড়ে তিন বছর ধরে চলা যুদ্ধের অভিমুখ বদলে দেবে কি না, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। ইউক্রেনের হামলায় ক্ষয়ক্ষতি কী হয়েছে, সে ব্যাপারে সরকারি ভাবে রাশিয়া কিছু জানায়নি এখনও। মঙ্গলবার ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়, বিষয়টি নিয়ে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্তও চলছে। পুতিনই পরে এ ব্যাপারে জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.