উৎসবের মরসুম শেষ হলেই গতি পেতে পারে চিংড়িঘাটায় আটকে থাকা মেট্রোর অরেঞ্জ লাইনের (কবি সুভাষ থেকে বিমানবন্দর) কাজ। অবশেষে চিংড়িঘাটায় অচলাবস্থার সমাধানের পথে হাঁটছে কলকাতার মেট্রো প্রকল্প। সব ঠিক থাকলে আগামী ১৪ নভেম্বর কাজ শুরু হতে পারে। কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে মঙ্গলবার দুপুরে মেট্রো ভবনে বৈঠকে বসে মেট্রো রেল, রেল বিকাশ নিগম লিমিটেড (আরভিএনএল), কেএমডিএ এবং কলকাতা ও বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের প্রতিনিধিরা। দীর্ঘ বৈঠক শেষে সূত্রের খবর, নভেম্বরের দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহে ট্রাফিক ব্লক নিয়ে ওই এলাকায় কাজ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে নিউ গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রো প্রকল্পের কাজ চিংড়িঘাটায় আটকে রয়েছে। প্রায় গোটা প্রকল্প শেষ হলেও মাত্র ৩৬৬ মিটার অংশে কাজ অসম্পূর্ণ রয়ে যাওয়ায় নতুন লাইনের সম্প্রসারণ আটকে গিয়েছিল। কলকাতা পুলিশের ছাড়পত্র না-পাওয়ায় কাজ এগোয়নি। এর ফলে নিউ গড়িয়া থেকে বেলেঘাটা পর্যন্ত মেট্রো চালু হলেও বিমানবন্দর পর্যন্ত পৌঁছোনো সম্ভব হয়নি।
মঙ্গলবারের বৈঠকে ঠিক হয়েছে, নভেম্বরের নির্দিষ্ট সপ্তাহগুলোতে শুক্র, শনি ও রবিবার চিংড়িঘাটা মোড়ে ট্রাফিক ব্লক নেওয়া হবে। সেই সব দিনে গাড়ি ঘোরানো হবে বিকল্প পথে। এই সময়ের মধ্যেই আরভিএনএল ৩৬৬ মিটার অসমাপ্ত কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। কর্মকর্তাদের আশা, এই কাজ সম্পূর্ণ হলে নিউ গড়িয়া থেকে জয়হিন্দ মেট্রো স্টেশন (বিমানবন্দর) পর্যন্ত অরেঞ্জ লাইন চালু করা যাবে। ফলে বহু প্রতীক্ষিত প্রকল্পের গতি বাড়বে। বৈঠকে চিংড়িঘাটা আন্ডারপাস তৈরির বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়েছে। যদিও সেখানে তেমন অগ্রগতি হয়নি। মেট্রো ভবন সূত্রে জানা গিয়েছে, বর্তমানে কর্তৃপক্ষের অগ্রাধিকার চিংড়িঘাটার জট কাটানো। কারণ এই অংশের কাজ শেষ না-হলে গোটা প্রকল্প ঝুলে থাকবে।
বৈঠকে গৌরকিশোর ঘোষ মেট্রো স্টেশন চালু করা হবে কি না, তা নিয়েও আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। কর্তৃপক্ষের মতে, বিষয়টি নিয়ে আরও আলোচনা দরকার। অন্য দিকে, বৈঠকের বিস্তারিত বিষয়ে কোনও পক্ষই প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি। কারণ, কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশে বৈঠকটি আয়োজিত হয়েছে। আদালতেই সমস্ত সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হবে।
উল্লেখ্য, নিউ গড়িয়া থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত অরেঞ্জ লাইন চালু হলে শহরের দক্ষিণ থেকে উত্তর-পূর্ব প্রান্তে পৌঁছোনো অনেক সহজ হবে। বিমানবন্দরগামী যাত্রীদের বড় ভরসা হয়ে উঠবে এই লাইন। বিশেষত সেক্টর ফাইভ, রাজারহাট-নিউ টাউন এলাকার সঙ্গে শহরের সরাসরি সংযোগ বাড়বে।