কম্পন রুখতে মেট্রোর লাইনের নীচে আছে ‘ডিভাইস’! চলছে নজরদারি, দুর্গাপিতুরি লেনে কী কী পদক্ষেপ? জানালেন কর্তৃপক্ষ

বৌবাজারের দুর্গাপিতুরি লেনের বাসিন্দাদের সমস্যা নিয়ে তৎপর মেট্রো কর্তৃপক্ষ। আনন্দবাজার ডট কম-এর খবর পড়ে বৃহস্পতিবারই তাঁরা এলাকা পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এসেছেন। কোন বাড়িতে কতটা ফাটল, মেট্রো চললে কতটা কম্পন অনুভূত হচ্ছে, সরেজমিনে দেখে এসেছেন শীর্ষ প্রযুক্তিবিদেরা। শুক্রবার আনন্দবাজার ডট কম-কে মেট্রো কর্তৃপক্ষ জানালেন, নজরদারি চলছে। যে সমস্ত বাড়িতে ছাদ বা দেওয়াল চুঁইয়ে জল পড়ছে, সেখানে ‘শেড’ লাগিয়ে দেওয়া হবে। তবে মাটির নীচ দিয়ে মেট্রো গেলে কিছুটা কম্পন স্বাভাবিক, দাবি মেট্রো কর্তাদের।

বৃহস্পতিবার দুর্গাপিতুরি লেনের পরিস্থিতি দু’দফায় পরিদর্শন করেছেন মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বিকেলের দিকে গিয়েছিলেন কলকাতা মেট্রোর অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার এবং অ্যাডিশনাল জেনারেল ম্যানেজার সিভিল ইঞ্জিনিয়ার স্বয়ং। বাসিন্দাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ওই এলাকায় মাটির ২৩ মিটার নীচ দিয়ে মেট্রো চলাচল করছে। লাইনের নীচে বসানো হয়েছে ভ্যান গার্ড বা বিশেষ ‘ডিভাইস’। মাটির উপরে কম্পন ঠেকাতে এই যন্ত্রের ব্যবস্থা। ধর্মতলা-শিয়ালদহ রুটে মেট্রো চালু হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত যন্ত্রে তেমন কোনও সমস্যা ধরা পড়েনি। ক্রমাগত নজর রাখছেন কর্তৃপক্ষ।

কম্পন মাপতে ‘ভাইব্রেশন মিটার’ লাগানো আছে দুর্গাপিতুরি লেনে। তবে ভূগর্ভস্থ পথে মেট্রো চললে মাটির উপরে কিছুটা কম্পন স্বাভাবিক, দাবি কর্তৃপক্ষের। রাস্তায় বড় গাড়ি বা ট্রাক চললেও এই ধরনের কম্পন হয়ে থাকে। যদিও বৌবাজারের বাসিন্দাদের আতঙ্ক সঙ্গত বলে মেনে নিচ্ছেন মেট্রো কর্তারা। জানিয়েছেন, আগামী দিনে কোনও সমস্যা তাঁদের নজরে এলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

দুর্গাপিতুরি লেন এবং তৎসংলগ্ন বৌবাজারের এলাকায় মেট্রোর কাজের জন্য এখনও অনেকে ঘরছাড়া। মোট ২৪টি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে নতুন করে তৈরি করতে হবে। এ ছাড়াও একটি বাড়িকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে তা-ও ভেঙে ফেলা হবে।

২০১৯ সালে মেট্রোর কাজের জন্য প্রথম বৌবাজারের বাড়িগুলিতে ফাটল দেখা দিয়েছিল। তখন তাৎক্ষণিক ভাবে বাসিন্দাদের অন্যত্র রাখার ব্যবস্থা করা হয়। পরে ২০২২ সাল থেকে টানা দু’বছর তাঁরা ভিটেছাড়া ছিলেন। এখন অনেকে ফিরে এসেছেন। অনেকের বাড়ি এখনও তৈরি হয়নি। যাঁরা ফিরেছেন, দুর্ভোগ তাঁদের নিত্যসঙ্গী। অনেক বাড়িতে ফাটল ছিল, তা দিন দিন চওড়া হচ্ছে। মেট্রোর কম্পনে বাড়ি কাঁপছে, অনেকে তাতে ভয় পাচ্ছেন। এ ছাড়া অনেক বাড়ির ছাদ চুঁইয়ে জল পড়ছে। কোনও কোনও বা়ড়ি বিপজ্জনক ভাবে হেলে আছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। মেট্রো কর্তৃপক্ষ এলাকার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছেন। সমস্যার দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.