বাদ দেওয়া হোক প্রধানমন্ত্রীকে, বিতর্কিত বিলে সুপারিশ করে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা! রাজি ছিলেন না মোদী, দিয়েছিলেন যুক্তিও

১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল নিয়ে শোরগোল চলছে দেশ জুড়ে। যুক্তি, পাল্টা যুক্তির ঝ়ড় উঠছে নানা মহলে। বিলের প্রস্তাব অনুযায়ী, গুরুতর অপরাধের অভিযোগে জেল খাটলে মন্ত্রিত্ব হারাতে পারেন প্রধানমন্ত্রীও! কিন্তু কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী পদকে এই বিল থেকে বাদ রাখার প্রস্তাব উঠেছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাবে সায় দেননি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীই! এমনই দাবি করলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজু। তিনি জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে মোদী বলেছিলেন, ‘‘আমার জন্য কোনও ব্যতিক্রম নয়!’’

সংবাদ সংস্থা এএনআই-কে রিজিজু জানান, মন্ত্রীদের বরখাস্ত করার বিল নিয়ে আলোচনার সময় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীকে বিধান থেকে বাদ রাখার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রধানমন্ত্রী মোদী তা প্রত্যাখ্যান করেন। রিজিজু বলেন, ‘‘মোদী মন্ত্রিসভার বৈঠকে বলেছিলেন, এই বিল থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অব্যাহতি রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু তা ঠিক নয়। প্রধানমন্ত্রীও এক জন নাগরিক। তাঁর বিশেষ সুরক্ষা থাকা উচিত নয়। বেশির ভাগ মুখ্যমন্ত্রীই আমাদের দলের। আমাদের লোকেরা যদি ভুল করে, তা হলে তাঁদেরও পদত্যাগ করা উচিত।’’

বুধবার লোকসভায় ১৩০তম সংবিধান সংশোধনী বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বিলে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী, কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, রাজ্যের মন্ত্রী কিংবা কোনও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মন্ত্রী যদি গুরুতর অপরাধের অভিযোগে টানা ৩০ দিনের জন্য হেফাজতে থাকেন, তবে ৩১তম দিন থেকে তিনি মন্ত্রিত্ব হারাবেন। পাঁচ বছর বা তার বেশি জেল হতে পারে, এমন অপরাধগুলিকে ‘গুরুতর’ হিসাবে ধরা হবে!

বুধবার শাহ লোকসভায় বিল পেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই হট্টগোল শুরু হয়। বিরোধীদের অভিযোগ, এই বিল আইনে পরিণত হলে তার মাধ্যমে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সংস্থাকে কাজে লাগাবে বিজেপি। বিরোধীশাসিত রাজ্যগুলিতে মুখ্যমন্ত্রী বা অন্য মন্ত্রীদের এই আইনের মাধ্যমে বিপদে ফেলা হতে পারে। বিরোধীদের দাবি, কেন্দ্র এই বিল এনে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে আঘাত করার চেষ্টা করছে। সংবিধানের মূল চেতনা ধাক্কা খাবে। সংবিধান অনুযায়ী, কেউ দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি নির্দোষ।

বৃহস্পতিবার রাজ্যসভাতেও এই বিল পেশ করা হয়েছে। বিলটি নিয়ে আলোচনার জন্য সংসদীয় যৌথ কমিটির কাছে পাঠানোর প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। লোকসভার প্রস্তাবে বিলটি নিয়ে আলোচনার জন্য ৩১ জন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.