জঙ্গিদের টার্গেট এবার উপত্যকার লিথিয়াম খনি! কেনাবেচা করলেই হামলার হুমকি জইশের সঙ্গীর

 সম্পদই হিংসার উৎস। জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu-Kashmir) লিথিয়ামের উৎস খুঁজে পাওয়ার পর ফের তা প্রমাণিত। এবার জঙ্গিগোষ্ঠীর হুমকি, জম্মু-কাশ্মীর থেকে যে সব সংস্থা লিথিয়াম উত্তোলন করে তা ব্যবসার কাজে লাগাবে, তাদের উপর হামলা হবে। পাক জঙ্গি সংগঠন জইশের (Jaish-e-Mahammad) সঙ্গী PAFF-এর তরফে চিঠি লিখে এই হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে। এর আগে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বারবার হুমকি দেওয়ায় উঠে এসেছে পিপলস অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট ফ্রন্টের নাম। এবার স্পষ্টতই তাদের টার্গেট উপত্যকার লিথিয়াম ভাণ্ডার।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি ভারতীয় ভূতত্ত্ব সমীক্ষকরা আবিষ্কার করেছিলেন, জম্মু-কাশ্মীরের রিয়াসিতে প্রায় ৬ মিলিয়ন টনের লিথিয়াম (Lithium) খনি রয়েছে। এরপরই PAFF-এর তরফে সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশে বার্তা দেওয়া হয়, নিজেদের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে একজোট হোন সকলে। সূত্রের খবর, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কোনও একটি জায়গা থেকে চিঠি লেখা হয়েছে। তাতে স্পষ্ট করে উল্লেখ, জইশের সঙ্গী এই সংগঠনটি উপত্যকার উন্নতি সাধন করবে এবং কোনও ভারতীয় সংস্থা যাতে তাদের ‘নিজেদের’ প্রাকৃতিক সম্পদ তুলে নিয়ে যেতে না পারে, সেই ব্যবস্থাও করবে। কেউ সে কাজ করলে তাদের উপর হামলা হবেই।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় খনি মন্ত্রক এক বিবৃতি জারি করে জানায়, দেশের মধ্যে এই প্রথমবার লিথিয়াম খনির সন্ধান মিলেছে কাশ্মীর উপত্যকায়। তাতে লিথিয়াম ও সোনা মিশ্রিত ৫১টি খনিজ ব্লক সংশ্লিষ্ট রাজ্য প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ৫টি ব্লকে রয়েছে সোনা। বাকিগুলিতে রয়েছে পটাশ, মলিডেনাম, বেস মেটাল প্রভৃতি। জম্মু-কাশ্মীর, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্র প্রদেশ, গুজরাট, ছত্তীশগড়, ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক, মধ্যপ্রদেশ, ওড়িশা- মোট ১১টি রাজ্যে এই মিনারেল ব্লকের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে।

আর এখানেই আপত্তি জঙ্গি সংগঠনের। ৫১টি যে ব্লক প্রশাসনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে, সেখান থেকে নিয়ম মেনে লিথিয়াম বেচাকেনা হবে। আর যেসব সংস্থা এই বিকিকিনিতে অংশ নেবে, তাদের উপর হামলার খাঁড়া ঝুলিয়েছে জইশের সঙ্গী PAFF। হুমকি চিঠির পাশাপাশি ড্রোনের (Drone)ছবি পাঠিয়েও তারা বুঝিয়ে দিয়েছে, লিথিয়াম খনির উপর কতটা নজরদারি চালাচ্ছে। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন বিষয়টি নিয়ে অত্যাধিক সতর্ক। বলা হচ্ছে, কাশ্মীরে যে নতুন শিল্প গড়ে ওঠার প্রভূত সম্ভাবনা, তা বানচাল করতেই পাক মদতে জঙ্গিরা এমন হুমকি দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, যুব প্রজন্মের মাথায় জিহাদের ভূত চাপিয়ে তাদের চাকরির রাস্তা থেকেও সরানো হচ্ছে। তবে জঙ্গিদের এহেন কৌশল কোনওভাবেই কাজে আসবে না বলে পালটা প্রত্যয়ী পুলিশও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.