ধসের কবলে রাস্তা থেকে বাড়ি, আবার ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাসে সিঁদুরে মেঘ দেখছে দার্জিলিংবাসী

প্রচণ্ড গরমের পর টানা বৃষ্টি শুরু হয়েছে পাহাড়ে। মঙ্গলবার থেকে চলছে টানা বৃষ্টি চলছে দার্জিলিং-সহ উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু জায়গায় লাল সতার্কতা জারি হয়েছে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস শনিবার পর্যন্ত চলবে এই বৃষ্টি। ফলে আরও দুর্ভোগ বৃদ্ধির আশঙ্কা পাহাড়ে।

গত ২৪ ঘণ্টায় পাহাড়ের একাধিক জায়গায় ধস নেমেছে। পরিস্থিতি এমন যে, তিস্তাবাজার থেকে কালিম্পং যাওয়ার রাস্তা আপাতত বন্ধ। শুক্রবার কালিম্পং জেলা প্রশাসন থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাসও তা-ই। তারা জানাচ্ছে, আগামী ২৪ ঘন্টায় দার্জিলিং, কালিম্পং জেলার পাশাপাশি সিকিমের গ্যাংটক, মংগন, নামচি-সহ একাধিক জায়গায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। ওই সব জায়গায় ইতিমধ্যে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। তিস্তা সংলগ্ন এলাকাতেও বাড়তি সতর্কতা নিয়েছে প্রশাসন।

শুক্রবার সিকিম, কালিম্পং এবং মিরিকে নতুন করে ধস নেমেছে। সিকিমের মঙ্গন থেকে চুংথাং যাওয়ার রাস্তা ধসের জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে খবর, মিরিকের ডাডা গ্রাম পঞ্চায়েতের থরবু গ্রামে ধসের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে একটি বাড়ি। বেশ কিছু বাড়ি ধসে যেতে পারে। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ওই বাড়িগুলির বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। একই পরিস্থিতি বিজনবাড়ি এলাকাতেও। সেখানেও ধসের জন্য একটি বাড়ির ক্ষতি হয়েছে। অন্তত আরও পাঁচটি বাড়িতে ক্ষতির আশঙ্কা। ওই বাড়িগুলির সদস্যদেরও নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

কালিম্পঙে ভারী বৃষ্টি এবং ধসের কারণে বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জীবন। আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। শুক্রবার সকালে বিড়িকদাড়ায় নতুন করে ধস নামে। বিকল্প হিসাবে লাভা, আলগাড়ার রাস্তা ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কালিম্পঙের ইয়াংমাকুম গ্রামে ট্রান্সফর্মার ধসের কবলে পড়ায় গোটা এলাকা এখন বিদ্যুৎহীন। আগামী সাত দিনেও ওই পরিস্থিতির উন্নতি হবে কি না, সন্দেহ রয়েছে। সেবক থেকে কালিঝোরা যাওয়ার রাস্তার একাংশ ধসে গিয়ে বিপত্তি ঘটেছে। অন্য দিকে, বিরিক ধারায় পাহাড় থেকে বড় পাথর গড়িয়ে নেমে সম্পূর্ণ ভাবে অবরুদ্ধ হয়ে গিয়েছে ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। তিস্তায় জল বৃদ্ধির ফলে আতঙ্ক বাড়ছে সাধারণ বাসিন্দাদের মধ্যে। সিকিমের আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর ডক্টর গোপীনাথ রাহা বলেন,‘‘শনিবারের পর থেকে বৃষ্টির পরিমাণ খানিকটা কমে আসবে। তবে বিক্ষিপ্ত ভাবে বেশ কয়েক জায়গায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার সর্বত্রই বৃষ্টি হবে৷ এই কারণে সিকিম-সহ উত্তরের প্রায় সবক’টি জেলাতেই লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। শনিবার থেকে পাহাড়ে ভারী বৃষ্টি চললেও সমতলে তার প্রকোপ কমে আসতে পারে।’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.