নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নাম সুপারিশ করেছে পাকিস্তান। তা নিয়ে এ বার ঘরের মাটিতেই বিদ্ধ সে দেশের শাহবাজ় শরিফের সরকার। তাঁদের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন সে দেশের সমাজকর্মী থেকে শুরু করে লেখক, এমনকি প্রাক্তন সরকারি আধিকারিকেরাও। সমাজমাধ্যমে তাঁরা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন।
পাকিস্তানের সংবাদিক এবং লেখক জ়াহিদ হুসেন সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়েছেন। তাঁর দাবি, ‘‘ট্রাম্প গাজায় চলতে থাকা গণহত্যার সমর্থন করেন। তাঁর নাম সুপারিশ করা দুর্ভাগ্যজনক। ট্রাম্প ইরানের উপর ইজ়রায়েলের হামলাকেও দারুণ বলেছেন। তাঁর নাম কোন যুক্তিতে সুপারিশ করা হল?’’
রাষ্ট্রপুঞ্জে প্রাক্তন পাক রাষ্ট্রদূত মালীহা লোধিও পাক সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তাঁর মত, তোষামোদ করে কিছু হয় না! মালীহার কথায়, ‘‘পাকিস্তানবাসী কখনওই এটা চায় না।’’ পাক পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষের সদস্য আল্লামা রাজা নাসিরের মত, শান্তির জন্য নয়, পাকিস্তান নিজেদের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এই সুপারিশ করেছে।
‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সমঝোতা করিয়ে দেওয়ার’ কৃতিত্ব ট্রাম্পকে দিয়ে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম সুপারিশ করেছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের বিদেশ দফতরের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ‘‘ক্রমবর্ধমান আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যেই অসাধারণ কূটনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিচয় দিয়েছেন ট্রাম্প। কৌশলে তিনি ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে সমঝোতা করিয়েছেন। পরিস্থিতির খুব দ্রুত অবনতি হচ্ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ট্রাম্প দুই পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্রের মধ্যে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছেন। এর ফলে বৃহত্তর সংঘাত এড়ানো গিয়েছে। লক্ষ লক্ষ মানুষের বিপর্যয় আটকানো গিয়েছে।’’ এর জন্যেই ২০২৬ সালের নোবেল শান্তি পুরস্কার ট্রাম্পের পাওয়া উচিত বলে মনে করেছে ইসলামাবাদ।
তাতে একেবারেই ‘বিস্মিত’ নন ট্রাম্প। বরং তিনি মনে করেন, এখনই তাঁর চার-পাঁচ বার ওই পুরস্কার পাওয়া উচিত। হতাশার সুরে এ-ও জানিয়েছেন, তাঁকে নোবেল শান্তি পুরস্কার দেওয়া হবে না। কেন দেওয়া হবে না, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প বলেন, “ওরা (নোবেল কমিটি) আমায় নোবেল শান্তি পুরস্কার দেবে না। কারণ এটা কেবল উদারপন্থী (লিবারাল)-দের দেওয়া হয়।’’ এর আগে আব্রাহাম চুক্তির মাধ্যমে ইজ়রায়েল এবং একাধিক আরব রাষ্ট্রের সম্পর্ক ‘সহজ’ করে তোলার জন্য সম্ভাব্য নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপক হিসাবে ট্রাম্পের নাম প্রস্তাব করেছিলেন তাঁর সমর্থকেরা। তবে পূর্বসূরি বারাক ওবামার মতো এখনও পর্যন্ত ওই পুরস্কার পাননি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। প্রসঙ্গত, শান্তিপ্রতিষ্ঠায় বিশেষ অবদানের জন্য নরওয়ের নোবেল কমিটি এই পুরস্কার দিয়ে থাকে।