একটি নয়, দুটি ট্রলি ছিল। মধ্যমগ্রামে সুমিতা ঘোষের খুনের ঘটনায় নতুন তথ্য পেল পুলিশ। এলাকার সিসিটিভি ফুটেজে তদন্তকারীরা লাল রঙের একটি ট্রলি দেখতে পান অভিযুক্তদের হাতে। নীল রঙের ঢাউস একটি ট্রলিতে পিসিশাশুড়ির দেহ কেটে ঢুকিয়েছিলেন ফাল্গুনী ঘোষ। কিন্তু লাল রঙের ট্রলিতে কী ছিল? তদন্তকারীদের অনুমান, ওই ট্রলিতেও সুমিতার দেহের কিছু অংশ ছিল। তা ছাড়া খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রও থাকতে পারে সেখানে। বস্তুত, সোমবারই মধ্যমগ্রামে পিসিশাশুড়ি সুমিতা ঘোষের খুনের ঘটনায় বৌমা ফাল্গুনী এবং তাঁর মা আরতি ঘোষকে সাত দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে বারাসত আদালত। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের সময় লাল রঙের ট্রলির রহস্য জানতে চাইবেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে এমনটাই খবর।
মধ্যমগ্রামে সুমিতাকে খুন করে তাঁর দেহ খণ্ড খণ্ড করে কেটে ট্রলি ব্যাগে ভরা হয়েছিল। গত সপ্তাহের মঙ্গলবার সেই ট্রলিটি গঙ্গায় ভাসাতে গিয়েছিলেন ফাল্গুনী এবং আরতি। তবে কুমোরটুলির অদূরে গঙ্গার ঘাটে তাঁদের ধরে ফেলেন স্থানীয়েরা। পুলিশ সূত্রের খবর, খুনের রাত থেকে পরের দিন দুপুর পর্যন্ত এলাকার সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন তদন্তকারীরা। সেগুলো খতিয়ে দেখে আরও একটি ট্রলির কথা জানতে পারা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, মধ্যমগ্রামের দোলতলা যাওয়ার জন্য নীল রঙের ট্রলি নিয়ে বার হওয়ার ৪২ মিনিট ১৮ সেকেন্ড আগে ফাল্গুনী এবং আরতি একটি লাল রঙের ছোট ট্রলি নিয়ে বেরিয়েছিলেন। তার পর তাঁদের ৩ মিনিট ১২ সেকেন্ডের যাত্রার পথ সিসিটিভি ফুটেজে মিলেছে। বাকি গন্তব্য জানা যায়নি। কারণ, সেই এলাকার কোনও সিসিটিভি ফুটেজ মেলেনি।
তদন্তকারীদের অনুমান, দেহের কিছু অংশ যা একটি ট্রলিতে আঁটেনি, সেটি দ্বিতীয়টিতে ঢোকানো হয়েছিল। তা ছাড়া রক্তমাখা অস্ত্রও ওই ট্রলিতে থাকতে পারে। মনে করা হচ্ছে, আবর্জনা ফেলার কোনও জায়গায় লাল রঙের ট্রলিটি ফেলা হয়েছে। ধৃতদের জেরা করে সে সম্পর্কে তথ্য জানতে চাইবে পুলিশ।
গত শনিবার রিকশা ভ্যানের চালক, ট্যাক্সিচালক এবং কুমোরটুলি এলাকার ছ’জনকে দিয়ে টিআই প্যারেডে ফাল্গুনী এবং আরতিকে চিহ্নিত করানো হয়েছে। সোমবার বারাসত আদালতে হাজির করানো হয় মা-মেয়েকে। আদালত তাঁদের সাত দিনের পুলিশি হেফাজত দেয়। পুলিশ ঘটনার পুনর্নির্মাণের পর খুনে ব্যবহৃত অস্ত্রের উদ্ধারের চেষ্টায় রয়েছে। অভিযুক্ত মা-মেয়ের খুনের পরের দিনের কার্যকলাপ নিয়েও তদন্ত চলছে। বারাসতের পুলিশ সুপার প্রতীক্ষা ঝারখারিয়া বলেন, ‘‘এক-দু’দিনের মধ্যে আবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। ধৃতদের বয়ান যাচাই করে তদন্ত হবে।’’