শুভেন্দুর গাড়ি দেখেই দৌড়, দরজা খুলতেই পায়ে হুমড়ি খেয়ে পড়লেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক! জল্পনা দলবদলের

২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন উত্তর ২৪ পরগনার নোয়াপাড়ার বিধায়ক সুনীল সিংহ। ভোটের পর পুরনো দলে প্রত্যাবর্তনও ঘটে। ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোট এগিয়ে আসতেই সেই সুনীলকে নিয়ে আবার দলবদলের জল্পনা জোরালো হল। জল্পনার কারণ— বৃহস্পতিবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করেছেন প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক। শাসকনেতার হাতে আবার পদ্মফুলও তুলে দেন শুভেন্দু।

বৃহস্পতিবার রাতে নোয়াপাড়ার গারুলিয়াতে শুভেন্দুর রাজনৈতিক সভা ছিল। সেই সভা সেরে ফেরার সময়েই তাঁর সঙ্গে সুনীলের সাক্ষাৎ হয়। বাঁশের রেলিংয়ের এক পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তৃণমূল নেতা। শুভেন্দুর গাড়ি দেখতে পেয়েই তিনি হাত নাড়তে থাকেন। শুভেন্দুও তাঁকে দেখতে পান। হাতও নাড়েন বিরোধী দলনেতা। এর পরেই শুভেন্দুর গাড়ির পিছন পিছন ছুটতে থাকেন সুনীল। শুভেন্দুও গাড়ি থামান। তিনি গাড়ির দরজা খুলে দিতেই তাঁর পায়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে প্রণাম করেন সুনীল। শুভেন্দু হাসিমুখে জড়িয়ে ধরেন। দু’জনের মধ্যে সৌজন্য বিনিময় হয়। সেই সময় সুনীলকে পদ্ম উপহার দেন বিরোধী দলনেতা।

এই দৃশ্যই যাবতীয় জল্পনার কারণ। সুনীল অবশ্য বলছেন, ‘‘উনি আমাকে দেখে নাম ধরে ডাকলেন। সেজন্য গিয়ে দেখা করলাম। দু’জনে একসঙ্গে বিধানসভায় ছিলাম। আমরা সব সময় বড়দের সম্মান জানাই। কালকেও করেছি। বিজেপিতে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই আসে না। আর কথা বলা মানেই বিজেপিতে যাওয়া নয়।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘ওঁর গাড়িতে একটা পদ্মফুল ছিল। আমায় দিলেন। এতে কোনও ইঙ্গিত নেই। বিজেপিতে যাওয়া নিয়ে কথা হয়নি। পদ্মফুলটা বিজেপির এক জনকে দিয়ে দিলাম।”

সুনীল ব্যারাকপুরের প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ভগ্নিপতি। অর্জুন বিজেপিতে আবার ফিরে গেলেও সুনীল এখনও তৃণমূলে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটের আগে বিজেপিতে গিয়েছিলেন অর্জুন। পদ্মের টিকিটে দাঁড়িয়ে ব্যারাকপুরের সাংসদও হয়েছিলেন। সেই ভোটের পরেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লিখিয়েছিলেন সুনীল। তখনও তিনি নোয়াপাড়ার বিধায়ক (তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন)। ২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের ঠিক আগে আগে ১৬তম বিধানসভার শেষ অধিবেশনের দিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করেছিলেন সুনীল। কিন্তু তখনই তিনি তৃণমূলে ফেরেননি। বলেছিলেন, ‘‘বিজেপিতেই ‘বড়িয়াঁ’ (ভাল) আছেন।’’ ‘বড়িয়াঁ’ থাকা বেশি দিন হয়নি। তৃণমূল তৃতীয় বার ক্ষমতা দখল করার পর ২০২২ সালেই আবার পুরনো দলে ফেরেন সুনীল।

তৃণমূল কি সুনীলের ‘বড়িয়াঁ’ দিন আবার শেষ হল? জল্পনা থেকেই গেল। কারণ সুনীল নিজেই বলেছেন, “রাজনীতিতে সব কিছু সম্ভব। মানুষ যাঁকে চাইবে, তিনি মুখ্যমন্ত্রী হবেন। মানুষ চাইলে দিদি চতুর্থ বার মুখ্যমন্ত্রী হবে। আর মানুষ যদি চায় শুভেন্দু অধিকারী মুখ্যমন্ত্রী হবেন, মেনে নিতে হবে।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.