‘রণক্ষেত্র’ ভাঙড়ে খুলছে দোকানপাট, জায়গায় জায়গায় পুলিশি টহল, তবে পরিস্থিতি এখনও থমথমে

পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিনে অশান্ত হয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। অশান্তির জেরে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন পর্বের শুরু থেকে শেষ দিন পর্যন্ত খবরের শিরোনামে থেকেছে সেই এলাকা। আতঙ্কের আর এক নামে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে প্রতি দিনই বোমাবাজি, গুলি, ইটবৃষ্টি, পুলিশের উপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে এলাকা। যার জেরে বেশ কয়েক দিন ধরে এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল। তৈরি হয়েছিল আতঙ্কের বাতাবরণ। বন্ধ ছিল দোকানপাট থেকে শুরু করে ব্যবসা-বাণিজ্য। রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছিলেন এলাকার সাধারণ মানুষ। তবে বৃহস্পতিবার মনোনয়ন পর্ব শেষ হওয়ার পর শুক্রবার থেকে ভাঙড়ের পরিস্থিতিতে সামান্য বদল এসেছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। শুক্রবার সকাল থেকে ভাঙড়ের বিভিন্ন এলাকার দোকানপাট খুলতে দেখা গিয়েছে। কয়েক দিন বন্ধ থাকার পর খুলতে দেখা গিয়েছে বেশ কয়েকটি সব্জি বাজারও। জায়গায় জায়গায় টহলদারি চালাচ্ছে পুলিশের বিরাট বাহিনী।

অসমর্থিত সূত্রের খবর, শুক্রবার ভাঙড়ে যেতে পারেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। রাজভবন সূত্রে খবর, শুক্রবার নিজের পূর্বনির্ধারিত সব কর্মসূচি বাতিল করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের আগমনকে কেন্দ্র করে সকাল থেকেই একাধিক জায়গায় কড়া পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। তবে রাজ্যপাল ভাঙড়ে যাবেন কি না, তা স্পষ্ট ভাবে রাজভবনের তরফে জানানো হয়নি।

শুক্রবার ভাঙড়ে দোকানপাট খুলতে দেখা গেলেও এখনও এলাকা জুড়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের আনাগোনাও নজরে না পড়ার মতো।

ভাঙড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে উত্তেজনা ছড়ায়। বিরোধীদের অভিযোগ, মনোনয়ন পর্বের শেষ দিনেও পুলিশের সামনেই সেখানে অবাধে সন্ত্রাস চলেছে। গুলি এবং বোমা চলছে। জ্বলেছে দোকানপাটও! বৃহস্পতিবার গভীর রাত পর্যন্ত দু’জনের প্রাণ গিয়েছে বলে স্থানীয়দের দাবি। তাঁদের মধ্যে এক জন ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) কর্মী, অন্য জন শাসক তৃণমূলের কর্মী বলে দাবি করা হয়েছে। তবে এ নিয়ে পুলিশ কোনও মন্তব্য করেনি। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে যে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে, সেখানেও মৃত্যুর উল্লেখ নেই।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়নকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সংঘর্ষের জেরে গত কয়েক দিন ব্যাহত হয়েছে ভাঙড়ের স্বাভাবিক জনজীবন। স্থানীয়দের দাবি, পুলিশ রাজনৈতিক সংঘর্ষ ঠেকাতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই এখন কেন্দ্রীয় বাহিনীর দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন তাঁরা। কেন্দ্রীয় বাহিনী টহল দিতে শুরু করলে এলাকায় শান্তি ফিরবে বলে আশাবাদী স্থানীয়রা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.