দুই শিশু-সহ ২৭ জনকে ফ্রান্সে রেখেই ভারতে ফিরল আটক সেই বিমান, অবশেষে মুক্তি যাত্রীদের

মানবপাচারের অভিযোগে নিকারাগুয়ার উদ্দেশে যাওয়া একটি বিমানকে ফ্রান্সের একটি বিমানবন্দরে আটকে রেখেছিল ফরাসি প্রশাসন। আগেই জানা গিয়েছিল, চার্টার্ড বিমানটিতে থাকা ৩০৩ জন যাত্রীর মধ্যে অধিকাংশই ভারতীয়। রবিবার ফ্রান্সের আদালত বিমানটিকে ছেড়ে দেওয়ার রায় দেয়। তার পরেই একাধিক পরীক্ষানিরীক্ষা শেষে সোমবার দুপুরে ফ্রান্সের শালোন-ভ্যাত্রি বিমানবন্দর থেকে ভারতের উদ্দেশে রওনা দেয় বিমানটি। মঙ্গলবার ভোর ৪টের সময় বিমানটি মুম্বই বিমানবন্দরে নামে।

ফরাসি প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথমে ফ্রান্সের স্থানীয় সময় সকাল ১০টায় বিমানটির ভারতের উদ্দেশে উড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ৩টে নাগাদ বিমানটি ফ্রান্সের মাটি ছাড়ে। যাত্রীদের মধ্যে দুই শিশু-সহ মোট ২৭ জন ফ্রান্সেই থেকে যান। একটি সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, নিরাপত্তার কারণে তাঁরা ফ্রান্সেই আশ্রয় চেয়েছেন। আবার যাত্রীদের একাংশ না কি তাঁদের নির্ধারিত গন্তব্য নিকারাগুয়াতে যেতে চেয়েছিলেন। পরে বিমানটির গন্তব্যস্থান বদল করায় অখুশি অনেকেই।

গত শুক্রবার জ্বালানি ভরার জন্য প্যারিস থেকে ১৫০ কিলোমিটার দূরে শালোন-ভ্যাত্রি বিমানবন্দরে অবতরণ করেছিল বিমানটি। বিমানে যাত্রীদের মধ্যে ছিল ১১টি শিশু, যাদের কোনও অভিভাবক ছিল না। ফরাসি প্রশাসনের সন্দেহ হয় যে, পাচারের উদ্দেশেই তাদের নিকারাগুয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তৎক্ষণাৎ বিমানটিকে আটক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আটকে পড়া যাত্রীদের জন্য বিমানবন্দর চত্বরেই থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়।

সংবাদ সংস্থা এএফপি একটি সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানায়, বিমানের ভারতীয় যাত্রীরা সংযুক্ত আরব আমিরশাহিতে কাজ করতেন। তাঁরা নিকারাগুয়া হয়ে আমেরিকা বা কানাডায় যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। যে বিমানে তাঁরা চেপেছিলেন, সেটি ছিল রোমানিয়ার সংস্থা লিজেন্ড এয়ারলাইনসের। ঘটনায় অসন্তুষ্ট বিমান সংস্থাটিও। তাদের দাবি, ওই উড়ানে শুধুমাত্র যাতায়াতের ব্যবস্থা করেছিল তারা। মানব পাচার হচ্ছিল কি না, সেই বিষয়ে তাদের কিছু জানা নেই। ওই সংস্থার বিরুদ্ধে ফরাসি সরকার কোনও পদক্ষেপ করলে পাল্টা আইনি পদক্ষেপের হুঁশিয়ারিও দেন ওই সংস্থার আইনজীবী। যদিও ফ্রান্সের সংগঠিত অপরাধ দমন শাখা ‘জুনালকো’ বিমানটির সঙ্গে কোনও অপরাধচক্র যুক্ত কি না, তার তদন্ত শুরু করেছে। ফ্রান্সে মানবপাচারের জন্য কোনও ব্যক্তি দোষী সাব্যস্ত হলে সর্বোচ্চ ২০ বছরের জন্য সাজা দেওয়া হয়ে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.