‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি’! ভারতের ব্রহ্মস হানা নিয়ে নিজেদের শঙ্কার কথা প্রকাশ করলেন পাকিস্তানি প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সিঁদুর অভিযানের সময় কতটা ‘ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি’ তৈরি হয়েছিল, কতটা শঙ্কা ছিল তাদের, সে কথাই এ বার স্বীকার করল পাকিস্তান। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ় শরিফের অন্যতম উপদেষ্টা রানা সানাউল্লা একটি টিভি চ্যানেলকে সাক্ষাৎকার দিয়ে জানিয়েছেন, ভারত যখন ব্রহ্মস ছোড়ে পাকিস্তানের সেনাঘাঁটি লক্ষ্য করে, তখন তাদের হাতে কয়েক সেকেন্ড ছিল। ওই ক্ষেপণাস্ত্রে পরমাণু অস্ত্র ছিল কি না, ওই সময়ের মধ্যেই পাকিস্তান সরকারকে বুঝতে হয়েছিল। সেই পরিস্থিতিকে ‘ভয়ঙ্কর’ বলে দাবি করেছেন তিনি।

পহেলগাঁও হামলার পরে পাকিস্তানের জঙ্গিঘাঁটি ধ্বংসের জন্য ‘অপারেশন সিঁদুর’ শুরু করেছিল ভারত। সে সময় পাকিস্তানের নুর খান বায়ুসেনা ঘাঁটি লক্ষ্য করে ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী। পাকিস্তান দাবি করল, সেই নুর খানে হামলার ধরন বোঝার জন্য তাদের হাতে মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময় ছিল। সানাউল্লার কথায়, ‘‘যখন ভারত ব্রহ্মস ছোড়ে এবং তা আমাদের নূর খান ঘাঁটিতে আঘাত হানে, তখন পাকিস্তান সরকারের হাতে ৩০ থেকে ৪৫ সেকেন্ড ছিল বোঝার জন্য যে, ওই ক্ষেপণাস্ত্রে আদৌ পরমাণু অস্ত্র ছিল কি না!’’ তার পরেই সানাউল্লা বলেন, ‘‘এই নিয়ে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি ছিল ভয়ঙ্কর।’’

সানাউল্লার দাবি, ওই হানা ‘পরমাণু হামলা’ বলে ধরে নিলে ভুল হতে পারত। সংঘাত আরও গুরুতর হতে পারত বলে দাবি করেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘আমি বলছি না যে, পরমাণু অস্ত্র ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ভারত ঠিক করেছে। কিন্তু এর ফলে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারত। তার জেরে পরমাণু যুদ্ধ হতে পারত। পরিণামে অকল্পনীয় ক্ষতি হত।’’ অনেকে মনে করছেন, সানাউল্লা এই মন্তব্য করে আসলে পাকিস্তানের পরিস্থিতি বোঝার ‘অক্ষমতা’ আড়াল ভারতের দিকে দায় ঠেলতে চাইছেন।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তান বায়ুসেনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঘাঁটি হল নূর খান। রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে রয়েছে সেটি। ১৯৭১ সালেও এই নুর খান লক্ষ্য করে হানা দিয়েছিল ভারত।

গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলায় ২৬ জনের মৃত্যু হয়। তার পরেই পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করতে সিঁদুর অভিযান শুরু করে ভারত। নুর খান-সহ পাকিস্তানের কয়েকটি সেনা ঘাঁটিতেও হানা দেয়। পাকিস্তান ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকায় হামলার চেষ্টা করলে তা রুখে দেয় ভারত। দুই দেশের মধ্যে সংঘাতের পরিস্থিতি হয়। শেষে দুই দেশ সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.