‘আত্মসমর্পণ কর’, কাতর আর্তি মায়ের! পুলওয়ামায় হত জঙ্গির শেষ ভিডিয়ো কল প্রকাশ্যে

জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামায় বৃহস্পতিবার সকালে নিরাপত্তাবাহিনীর গুলিতে তিন জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্যতম ছিল আমির নাজ়ির ওয়ানি। মৃত্যুর আগে শেষ বার সে মায়ের সঙ্গে ভিডিয়ো কলে কথা বলেছিল। প্রকাশ্যে এসেছে সেই ভিডিয়ো কল। সেখানে দেখা গিয়েছে, ছেলেকে পুলিশের হাতে আত্মসমর্পণ করার জন্য বার বার অনুরোধ করছেন মা। কিন্তু মায়ের সেই কথায় কর্ণপাতই করেনি আমির। এই ভিডিয়ো কলের কয়েক ঘণ্টা পরেই তার মৃত্যু হয়েছে। ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম।

ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার পুলওয়ামায় নিহত তিন জঙ্গিই জইশ-ই-মহম্মদের সদস্য ছিল। অবন্তীপোরার ত্রাল এলাকায় তাদের লুকিয়ে থাকার খবর পেয়েছিল নিরাপত্তাবাহিনী। তার পরেই সেখানে অভিযান চালানো হয়। বেশ কিছু ক্ষণ নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াই চলে জঙ্গিদের। মৃত্যু হয় তিন জনেরই। আমির ছাড়াও নিহতদের মধ্যে রয়েছে আসিফ আহমেদ শেখ এবং ইয়াওয়ার আহমদ ভাট। তারা তিন জনেই পুলওয়ামার বাসিন্দা। সূত্রের খবর, ত্রালের নাদির গ্রামের একটি বাড়িতে তারা লুকিয়েছিল। সেখান থেকেই আমির মাকে ভিডিয়ো কল করে। মা ছাড়াও তার কথা হয় বোনের সঙ্গে।

ভিডিয়ো কলে দেখা গিয়েছে, মা আত্মসমর্পণ করতে বলছেন ছেলেকে। কিন্তু আমির সেই অনুরোধ উড়িয়ে দিয়ে বলছে, ‘‘সেনাবাহিনীকে আসতে দাও। আমরা তার পর দেখে নেব।’’ এই কথোপকথনের সময়ে তার হাতে একে৪৭ বন্দুক ধরা ছিল। আসিফের বোনের সঙ্গেও ওই ভিডিয়ো কলে কথা বলেছিল আমির। তিনি দাদার খোঁজ নিয়েছিলেন। এর কিছু ক্ষণ পরেই নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে জঙ্গিদের গুলির লড়াই শুরু হয়। তাতে তিন জনের মৃত্যু হয়। ভাইরাল ফুটেজ দেখে অনুমান, এই ভিডিয়ো কলটি আমিরের মায়ের দিক থেকে অন্য কোনও ফোন দিয়ে কেউ রেকর্ড করেছেন। অর্থাৎ, বাইরে থেকে তা রেকর্ড করা হয়েছে। পরে তা ছড়িয়ে পড়ে।

নিহত আসিফের বাড়ি কিছু দিন আগে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল আইইডি বিস্ফোরণে। তাদের তিন জনের খোঁজেই দীর্ঘ দিন ধরে তল্লাশি চলছিল। নিরাপত্তাবাহিনী চেয়েছিল, এই তিন জন আত্মসমর্পণ করুক। কিন্তু তারা ধরা দেয়নি। গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওয়ে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। তার পর জম্মু-কাশ্মীর ও সংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ ও সেনাবাহিনী। তখনই অনেক জঙ্গির বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। আমির, আসিফেরাও সেই সময়ে গা-ঢাকা দেয় বলে মনে করা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.