এলাহাবাদ হাইকোর্টের ধর্ষণ মামলার আরেকটি ‘দুর্ভাগ্যজনক’ রায়ের তীব্র সমালোচনা করেছে সুপ্রিম কোর্ট।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট, এলাহাবাদ হাইকোর্টের আরও একটি বিতর্কিত রায়ের বিপক্ষে মন্তব্য করেছে। কিছুদিন আগে এলাহাবাদ হাইকোর্টের একজন বিচারক একটি ধর্ষণের ঘটনায় রায় দিতে গিয়ে বলেছেন যে, একজন নির্যাতিতা ‘সমস্যাকে নিজেই আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং এই ধর্ষণের জন্য তিনি নিজেও দায়ী’।
এর আগে ‘স্তন খামচে সালোয়ারেরর দড়ি ছিঁড়েছে, তো! এটা মোটেই ধর্ষণ নয়’- এলাহাবাদ হাইকোর্টের এমনই এক চমকে দেওয়ার মতো রায়কে সুপ্রিম কোর্ট ‘সম্পুর্ণ অমানবিক, অসংবেদনশীল রায়’ বলেই জানিয়েছিল। এই এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিতর্কিত রায়ের তীব্র সমালোচনা করার পর, মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট একই আদালতের আরেকটি রায়ের গুরুত্ব সহকারে দেখেছে। এবার, শীর্ষ আদালত ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করার সময় বিচারকের করা মন্তব্যকে তীব্র ভর্তসনা করেছে। রায় দেওয়ার সময় সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বি.আর. গাভাই বলেছেন, ‘বিচারে জামিন দেওয়া হোক, কিন্তু কেন এমন মন্তব্য করবেন একজন বিচারক ধর্ষণের ঘটনায়? বিচারকে খুব সতর্ক থাকতে হবে সংবেদনশীল ঘটনায়।’
এলাহাবাদ হাইকোর্টের বিচারপতি সঞ্জয় কুমার সিং ১১ মার্চ ধর্ষণের ঘটনায় রায় দিতে গিয়ে বলেছেন যে, ‘নির্যাতিতা দিল্লিতে পেয়িং গেস্ট হিসেবে থাকতেন, স্নাতকোত্তর ছাত্রী। তিনি বন্ধুদের সঙ্গে একটি রেস্তোরাঁয় গিয়েছিলেন যেখানে তাঁরা ভোর ৩টে পর্যন্ত মদ্যপান করেছিলেন এবং ‘মাতাল’ হয়ে পড়েছিলেন। যেহেতু তাঁর সহায়তার প্রয়োজন ছিল, তাই তিনি নিজেই অভিযুক্ত নিশ্চল চন্দকের বাড়িতে যেতে এবং বিশ্রাম নিতে রাজি হন।’
নির্যাতিতা জানান যে, ‘অভিযুক্ত তাঁকে এক আত্মীয়ের ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেছে।’ কিন্তু বিচারপতি সঞ্জয় কুমার সিং বলেন যে, এই অভিযোগ মিথ্যা এবং রেকর্ডে থাকা প্রমাণের পরিপন্থী। তিনি আরও বলেন, এটি ধর্ষণের মামলা নয় বরং দুই পক্ষের মধ্যে সম্মতির যৌনতা। অভিযুক্ত এবং মহিলা উভয়ই প্রাপ্তবয়স্ক এবং মহিলা তাঁর কাজের নৈতিকতা এবং তাৎপর্য বোঝার জন্য যথেষ্ট যোগ্য। যদি নির্যাতিতার অভিযোগ সত্য বলে গ্রহণ করাও হয়, তবুও এটাও বলা যেতে পারে যে তিনি নিজেই ঝামেলা ডেকে এনেছিলেন এবং এর জন্য দায়ীও ছিলেন।’
সুপ্রিম কোর্ট এখন চার সপ্তাহ পর মামলাটির পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।